খেলাধুলা

হার দিয়ে শেষ আশা জাগানিয়া আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ মিশন

বিশ্বকাপের এবারের আসরে দারুণ খেলেছে আফগানিস্তান। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার দৌড়ে ছিল তারা। কিন্তু অন্য দলগুলোর বড় জয়ে তারা ক্রমে পিছিয়ে যেতে যেতে মুখোমুখি হয় কঠিন সমীকরণের। শেষ পর্যন্ত সেই সমীকরণ আর মেলানো সম্ভব হলো না। আশা জাগানিয়া আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হলো হার দিয়ে।

লিগপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে তারা হার মেনেছে ৫ উইকেটে। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান ৫০ ওভারে ২৪৪ রানে অলআউট হয়। জবাবে ১৫ বল ও ৫ উইকেট হারে রেখে জয় তুলে নেয় আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকা।

রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৪ রান তোলেন কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা। এই রানে বাভুমার বিদায়ে ভাঙে জুটি। তিনি ৩ চারে ২৩ রান করে যান। ৬৬ রানের মাথায় ফেরেন কুইন্টন ডি ককও। তিনি ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ রান করেন।

সেখান থেকে এইডেন মার্করাম ও রাসি ফন ডে ডুসেন ১১৬ পর্যন্ত টেনে নেন দলীয় সংগ্রহকে। সেখানে গিয়ে থামেন মার্করাম। ১ চার ১ ছক্কায় ২৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

নতুন ব্যাটসম্যান হেনরিক ক্লাসেন ১৩৯ রানের সময় সাজঘরে ফেরেন। ১ চারে ১০ রান করেন তিনি। এরপর ডেভিড মিলার আউট হন ১ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করে। দলীয় রান তখন ১৮২।

সেখান থেকে ডুসেন ও আন্দিলে ফেলুকাওয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ডুসেন ৬টি চার ও ১ ছক্কায় ৭৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন ফেলুকাওয়ে।

বল হাতে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খান ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হন ডুসেন।

তার আগে ব্যাট করতে নেমে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ৮ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করেন। রান তোলেন ৪১টি। কিন্তু এরপর ৫ রানের ব্যবধানে ৩টি উইকেট হারায় আফগানিস্তান।

নবম ওভারের প্রথম বলেই কেশভ মহারাজের শিকার হয়ে ফেরেন গুরবাজ। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৫ রান করে যান তিনি। দলীয় রান তখন ৪১। জেরাল্ড কোয়েটজের করা দশম ওভারের তৃতীয় বলে আউট হন ইব্রাহিমও। ৩ চারে ১৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৪৫ রানের মাথায় ফেরেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। ব্যক্তিগত ২ রানে তাকে ফেরান মহারাজ।

সেখান থেকে রহমত শাহ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই দলীয় সংগ্রহকে টেনে নেন ৯৪ পর্যন্ত। অবশ্য এই রানেই ভাঙে এই জুটি। লুঙ্গি এনগিদির বলে ডেভিড মিলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রহমত শাহ (২৬)।

এরপর ১১২ রানের মাথায় ইকরাম আলী খিল (১২) ও ১১৬ রানে মোহাম্মদ নবী (২) ফেরেন সাজঘরে। তাদের দুজনকে আউট করেন কোয়েটজে ও এনগিদি।

আজমতউল্লাহর সঙ্গে সপ্তম উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন রশিদ খান। কিন্তু ১৬০ রানের মাথায় ভাঙে তাদের প্রতিরোধ। আন্দিলে ফেলুকাওয়ে উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি ককের তালুবন্দি করিয়ে ফেরান রশিদকে (১৪)।

সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও আজমতউল্লাহ ছিলেন নির্ভিক। ঠাণ্ডা মাথায় তিনি ৭১ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় পূর্ণ করেন ফিফটি। নূর আহমদকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৪৪ রান। কোয়েটজের তৃতীয় শিকার হয়ে নূর আহমদ ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ৪টি চারে ২৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

এরপর ২২৬ রানে কোয়েটজের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন মুজিব উর রহমান (৮)। আর শেষ ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৪৪ রানে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রান আউট হন নাভিন-উল-হক। আজমতউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ৯৭ রানে। মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১০৭ বলে খেলা তার ইনিংসে ৭টি চার ও ৩ ছক্কার মার ছিল।

বল হাতে কোয়েটজে ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৪৪ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন। লুঙ্গি এনগিদি ও কেশভ মহারাজ নেন ২টি করে উইকেট।