প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের বহুল কাঙ্খিত দৃষ্টিনন্দন বাঁকখালী সেতুর উদ্বোধন করেছেন। শনিবার (১১ নভেম্বর) তিনি এই সেতুর সঙ্গে আরও ১৬টি প্রকল্পের দ্বার উন্মোচন করেন। উদ্বোধন উপলক্ষে সন্ধ্যায় বাঁকখালী সেতুতে চলে আতশবাজি উৎসব।
আতশবাজির বর্ণিল আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের আকাশ। এসময় দূর-দূরান্ত থেকে বাঁকখালী সেতুতে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। আতশবাজির পর সেতুটি কিছু সময়ের জন্য সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এসময় আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মানুষ সেতুর এপার-ওপার ঘুরে দেখেন। উদ্বোধন ঘিরে সেতুটি সাজানো হয় রঙ-বেরঙের আলোক সজ্জায়। অনেক দূর থেকে সবার নজর কাড়ে সেতুর এই আলোক সজ্জা।
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল মালেক বলেন, ‘সেতুটি সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এতে পর্যটন শিল্পের নতুন দ্বার উন্মোচনের পাশাপাশি কম সময়ে মানুষ শহরে যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। শহর সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও এই সেতু ভূমিকা রাখবে। সেতু চালু হলে নবগঠিত ঈদগাও উপজেলা এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের দূরত্ব অনেক কমে যাবে।’
কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. ইউনুছ ভূইয়া বলেন, ‘কক্সবাজার শহরের পশ্চিম পাশে বাঁকখালী নদীর ওপর গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হয়। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন। ২৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের দৃষ্টিনন্দন এই সেতু এক মাসের মধ্যে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। মূলত কক্সবাজার শহর থেকে নদীর উত্তর পাড়ে খুরুশকুলের আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য বাঁকখালী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়।’
সেতুটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। অধিদপ্তরের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন খান বলেন, ‘বাঁকখালী নদীর ওপর প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এটি অর্থনীতি ও পর্যটনের জন্য অপার সম্ভাবনার।’
খুরুশকুল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান শাহজাহান ছিদ্দিকী ও ভারুখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল বলেন, সেতুকে ঘিরে আশপাশের এলাকার মানুষ অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। খুরুশকুলের মনুপাড়ার ফসল ও ঘেরের মাছ কক্সবাজার শহরে বিক্রি করতে যেতে হতো নৌকায় করে। এখন গাড়িতে অল্প সময়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে। সেতু হওয়ায় খুরুশকুলের জায়গা জমির দাম বাড়ছে। সেখানকার কয়েক হাজার একর জমিতে উৎপাদিত লাখ লাখ মণ লবণ আগে নৌকা ও কার্গোতে সরবরাহ করা হতো। এখন ট্রাকে বোঝাই করে সরাসরি কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।’