সারা বাংলা

৫ বছর পর খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে উৎসবের আমেজ

৫ বছর আট মাস পর বড় কোনো আয়োজনে যোগ দিতে আজ খুলনায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমনকে কেন্দ্র করে নগরীতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে সার্কিট হাউজ ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিবেন তিনি। এ সফরে ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুপুর পৌনে একটার দিকে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১-২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিকেল পৌনে ৩টায় সার্কিট হাউজ মাঠে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি। এরপর একই স্থানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত খুলনা বিভাগীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী আজ ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা ২২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২২৩ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে নগরীতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগরী। ইতোমধ্যে সার্কিট হাউজ মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে বিশালাকৃতির মঞ্চ। আলোকসজ্জা করা হয়েছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচনের আগে এই জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী জনসভায় দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করবেন। তিনি আগামী নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দিক সামনে নিয়ে আসবেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছি। এবারের জনসভা হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। জনসভাস্থলের আশপাশের সড়কে মাইক দেওয়া হয়েছে। যাতে সভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও নেতাকর্মীরা সড়কে দাঁড়িয়ে নেত্রীর ভাষণ শুনতে পারেন।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, সমাবেশের সময় সার্কিট হাউস মাঠে থাকবেন নারী নেতাকর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরের কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হবে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।

তিনি আরও বলেন, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন, তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এ জন্য রূপসা ঘাটে ৫টি ফেরি দেওয়া হয়েছে। আর নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরের নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এছাড়া, জেলখানা ঘাটে ৩-৪টি ফেরি দেওয়া হয়েছ। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য থাকবে একটি স্পেশাল ট্রেন। সব মিলিয়ে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, খুলনাবাসীর ১৮টি দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে ইতিবাচক ঘোষণা দেবেন বলে আশা করছি।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জনসভাস্থলে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে। সার্কিট হাউজ মাঠ ও আশপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গোটা নগরী নিরাপত্তার চাদরের ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জনসভাস্থলে আসা এবং জনসভা শেষে লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নগরীতে যেন যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানের জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ব্যক্তিগত সফরে সর্বশেষ তিনি খুলনায় এসেছিলেন।