গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ঘোপেরডাঙ্গা গ্রামের দিনমজুর জিকরুল খানের ছেলে আজমাইন খান। ছোট বেলাই থেকেই হাঁটতে পারে না সে। কাজ ফেলে প্রতিদিন তাকে কোলে করে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে হতো মাকে। ক্লাস শেষে আবার কোলে করে বাড়ি নিয়ে যেতে হতো তাকে। কিন্তু এখন মাকে কষ্ট করে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে হবে না। হুইল চেয়ারে করে নিজেই বিদ্যালয়ে আসতে পারবে সে।
হুইল চেয়ার পেয়ে আনন্দিত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ঘোপেরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমাইন খান। শুধু আজমাইন নয় ওই উপজেলার আরও চার বিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পিইডিপি প্রকল্পের আওতায় হুইল চেয়ার পেয়ে খুবই খুশি।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে পিইডিপি প্রকল্পের আওতায় উপজেলার কেরাইলকোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে হুইল চেয়ার উপহার দেন গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার।
এসময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ জেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যারতন বিশ্বাস, জীবনকৃষ্ণ চৌকিদার, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মিয়া।
আজমাইনের বাবা জিকরুল খান বলেন, ছেলে হাঁটতে না পারায় প্রতিদিন সকালে কোনো রকমে রান্না করে ওকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন আমার স্ত্রী। ক্লাস শেষে আবারও ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসেন তিনি। দুই ব্যাংক থেকে মোট ১ লাখ টাকা কৃষিঋণ নিয়ে ছেলেকে চিকিৎসা করিয়েছি। ছেলের চিকিৎসার পরে একটা হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমার ছিলো না। সরকার থেকে একটা হুইল চেয়ার দেওয়ায় অনেক উপকার হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী খুবই মেধা সম্পন্ন। কিন্তু দারিদ্রতাসহ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তারা বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হতে পারে না। একটা হুইল চেয়ারের জন্য কোনো প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর পড়ালেখা যাতে বন্ধ না হয় তাই হুইল চেয়ার উপহার দেওয়া হয়েছে। এখন তারা কারো সহযোগিতা ছাড়াই বিদ্যালয়ে এসে সুন্দরভাবে পড়ালেখা করতে পারবে।