ভারতীয় সংগীতশিল্পী অনুপম রায়। বসন্তের কোনো এক সন্ধ্যায় গায়িকা-সমাজকর্মী পিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারপর গড়ে উঠে বন্ধুত্ব এবং প্রেম। ২০১৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়েন এই যুগল। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর এক টুইটে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন অনুপম রায়। যদিও বিবাহবিচ্ছেদের সুনির্দিষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করেননি এই দম্পতি।
বিচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়ার পর খানিক সময়ের জন্য থমকে যায় অনুপম রায়ের ভক্তরা। বিচ্ছেদের কারণ আড়ালে থাকায় নানা প্রশ্ন তুলেন নেটিজেনরাও। ঠিক ওই সময়ে টলিপাড়ায় গুঞ্জন চাউর হয়, অভিনেতা পরমব্রত চ্যাটার্জির সঙ্গে পিয়ার পরকীয়া সম্পর্কের কারণে সংসার ভেঙেছে অনুপমের। যদিও এই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন পরমব্রত। কিন্তু গতকাল পিয়া চক্রবর্তীকে বিয়ে করেছেন পরমব্রত। এদিন সকাল থেকেই বিষয়টি দুই বাংলায় চর্চায় পরিণত হয়েছে।
বিয়ের আসরে পরমব্রত-পিয়া
পিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অনুপম রায়। বিচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়ার দেড় মাস পর টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেন অনুপম রায়। এ আলাপচারিতায় অনুপম পরিষ্কার করেন, পিয়া তার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি ফের ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশেষ করে পিয়াকে নিয়ে অনুপমের কয়েকটি মন্তব্য নজর কেড়েছে নেটিজেনদের।
বিচ্ছেদের বিষয়ে কথা বলার শুরুতে অনুপম রায় বলেছিলেন, ‘পিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি। আমার পাশে আমার বাবা-মা ও বন্ধুরা রয়েছে। কিন্তু আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বিশেষ ব্যক্তিকে হারিয়ে ফেলেছি। আমার ৩৯ বছর বয়সে এরকম বড় কিছু জীবন থেকে হারাইনি। বিচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়ার পর অনেক মানুষ আমাকে কল করেছেন; কেউ-ই এমনটা প্রত্যাশা করেননি। অনেকে প্রশ্ন করেছেন— এটা কেন করলেন? তাদের এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না বা বাস্তবসম্মতও মনে হয়নি। কিন্তু এটি ঘটেছে এবং শেষ হয়েছে।’
অনুপম রায়ের দেওয়া পুরোনো সাক্ষাৎকারের স্ক্রিনশট
পিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন অনুপম। তা উল্লেখ করে এ গায়ক বলেন, ‘আমি আমার জীবন নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমি এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে পারছি না। সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে (২০২১) আমার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। কিন্তু আমার বাবা-মা পাশে ছিলেন। আমি আমার বাবা-মাকে নিয়ে গর্বিত। আমার শ্বশুরবাড়ির মানুষজনও আমার পাশে ছিলেন। আমার বন্ধুরা এখনো আমার পাশে আছে। ৩৯ বছর বয়সে বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে যাওয়াটা কঠিন, এটা কলেজ জীবনের কোনো বিচ্ছেদ নয়।’
পিয়া চক্রবর্তী
প্রথম সংসার ভাঙার পর পিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অনুপম। প্রথম সংসার ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে অনুপম বলেছিলেন, ‘আমার আগের বিয়েবিচ্ছেদের সঙ্গে যথেষ্ট লজিস্টিক এবং আইনি চাপ ছিল। কিন্তু এটার (পিয়া) মতো মানসিক আঘাত ছিল না। কারণ পিয়া আমার জীবনের ভালোবাসা ছিল। আমাদের এক দশকের সম্পর্ক ছিল; পিয়ার মতো আর কাউকে এতটা ভালোবাসিনি।’
পরমব্রতর সেলফিতে পিয়া ও অনুপম
ব্যক্তিগত জীবনে পরমব্রত ও অনুপম ভালো বন্ধু ছিলেন। এখনো পরমব্রতর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে অনুপম বলেছিলেন, ‘মনে হয় না, বিচ্ছেদের ঘোষণার পর আমাদের কথা হয়েছে। কিন্তু এখানে কোনো বাধা-নিষেধ নেই। আমরা কথা বলব, যখন প্রয়োজন মনে করব।’