ভারতের রপ্তানি বন্ধের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। নীলফামারীর পাইকারি বাজারগুলোতে এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে জেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার পাইকারি বাজারে ভারতীয় ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত। যা শুক্রবার সকালে বিক্রি হয়েছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। অপরদিকে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডোমার কাঁচা বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা গোলাম কুদ্দুস বলেন, ১০০ টাকার পেঁয়াজ এক দিনের ব্যবধানে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এটা কী মগের মুল্লুক? দেখার কেউ নেই, বলারও কেউ নেই আমাদের দেশে।
জামাল হোসেন নামে এক দিনমজুর বলেন, আমরা ক্ষেতে কাজ করে দিন হাজিরা পাই ৪০০ টাকা। আধা কেজি পেঁয়াজ কিনতে লাগে ১১০ টাকা। তাহলে চাল কিনবো কী করে, আর খাব কী?
সৈয়দপুর ঢেলাপীর এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, কাঁচাবাজারে এসে পেঁয়াজের দাম শুনে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। তাই রাগ করে আর পেঁয়াজ কিনিনি। পেঁয়াজ ছাড়া রান্না হলে হবে, না হলে নাই। আমরা সাধারণ জনগণ তো সবকিছু মেনে নিয়েই চলছি।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী পাপ্পু ইসলাম বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ হওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ না থাকায় দেশির উপর চাপ বেড়েছে। অনেকে দুই-তিন কেজি করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। দাম বাড়ার চিন্তা করে তারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এভাবে। আর যারা দিনমজুর, তারা ২০-৩০ টাকার করে পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছেন।
আব্দুল ওহাব নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমার একটি গাড়ি পেঁয়াজ আনার জন্য রংপুরে পাঠিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে গাড়িটাকে ফিরে আসতে হয়। কারণ ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ। গাড়িটা খালি ঘুরে আসার ফলে ভাড়া আমাকে ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এদিকে, আড়ৎদাররা এক রাতে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিলে আমাদের আর কী-বা করার থাকে। আমাদের কিনে তারপর বিক্রি করতে হয়। সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এই পেঁয়াজের সঙ্গে জড়িত সব সিন্ডিকেটদের ধরে আইনের আওতায় আনা হোক।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নীলফামারীর সহকারী পরিচালক সামসুল আলম বলেন, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে মহাপরিচালকের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।