অর্থনীতি

চার ব্রোকারেজ হাউজে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ডিএসই’র অর্থ প্রদান

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি ব্রোকারেজ হাউজের ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ হাজার বিনিয়োগকারীদের মাঝে অর্থ প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী এই অর্থ প্রদান শুরু করা হয়েছে।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ডিএসই’র প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খাইরুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে দুজন বিনিয়োগকারীর হাতে চেক হস্তান্তরের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পর্যায়ক্রমে বিইএফটিআইন সিস্টেমের মাধ্যমে ২৫ টাকা কোটি পরিশোধ করবে ডিএসই।

ক্ষতিগ্রস্ত চার ব্রোকারেজ হাউজ হলো- ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেড, বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেড, তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত ১ অক্টোবরের মধ্যে যেসব ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী ডিএসইতে অভিযোগ দাখিল করেছেন, শুধুমাত্র সেসব বিনিয়োগকারীদের ইনভেস্টরস প্রোটেকশন ফান্ড (আইপিএফ) থেকে ২৫ কোটি টাকা তাদের নিজ নিজ বিও হিসাবে উল্লেখিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র কমিশনার মো. আব্দুল হালিম, ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনাদের হাতে কিছু টাকার চেক তুলে দিতে পারছি৷ আমরা আশা করছি, পর্যায়ক্রমে সব বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধ করতে পারবো। আমি বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে বাজারে একটা ইতিবাচক বার্তা যাবে। আমরা সকল পাওনা পরিশোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীরা যেন এ ধরনের ঘটনায় ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়েও আমরা সতর্ক রয়েছি। এটি খুবই আনন্দের বিষয় যে, কমিশনের কমিশনার আব্দুল হালিম যিনি এই ফান্ড (ইনভেস্টরস প্রোটেকশন ফান্ড) থেকে বিনিয়োগকারীগণ যেন টাকা পায়, সেই বিষয়ে তৎপর ছিলেন। আজ তার উপস্থিতিতেই বিনিয়োগকারীদের টাকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হলো।

এ সময় ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকেও এ বিষয়ে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিএসইসি কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, অল্প কিছু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দিতে পারছি, এটা আনন্দের। তবে আইন-কানুন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হতে হবে। যেন কেউ কোনও বিনিয়োগকারীর টাকা আত্মসাৎ করতে না পারে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে পারলে পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়বে। এই চারটি প্রতিষ্ঠানে টাকা আত্মসাতের পর নতুন করে কেউ আর আত্মসাৎ করতে পারেনি। এটা বন্ধ করতে নতুন আইন করতে হয়নি। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে, মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। যেন ভবিষ্যতে আর কেউ অর্থ আত্মসাৎ করতে না পারে।

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু বলেন, ডিএসইতে একটা যাত্রা শুরু হলো। বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দরকার আছে। অল্প পরিসরে হলেও আমরা প্রমাণ করতে পারলাম, আমরা বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করি; আমরা বিনিয়োগকারী বান্ধব। তাদের সাথে নিয়ে চলতে চাই। আজকের এই চেক হস্তান্তর বাজারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা শুধু বড় বড় বিনিয়োগকারীদের কথা ভাবি না, ছোট ছোট বিনিয়োগকারীদের কথাও চিন্তা করি।