তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজকে নির্বাচনমুখী। মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা দেখা দিয়েছে। এটি নির্বাচন বর্জনকারী ও প্রতিহতকারীদের মুখে চপেটাঘাত। আগামী ৭ জানুয়ারি উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে নির্বাচন বর্জনকারীদের মুখে কালিমা লেপন করবে এই দেশের জনগণ।’
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় র্যালি পূর্ব লিচুবাগান বাসস্ট্যান্ডে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করে তাপবিদ্যুৎ গেইট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন।
আরও পড়ুন: সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় তথ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, তখন পাকিস্তানিদের অনেকে পরাজয়ের পর নিজেদের আত্মতুষ্টির জন্য বলেছিলেন, কালো-বেঁটে মানুষ, বোকা বাঙালিরা আমাদের থেকে ভাগ হয়ে গেছে ভালোই হয়েছে। কিন্তু, আজকে পাকিস্তানে আলোচনা হয় দয়া করে আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। এখন পাকিস্তান বাংলাদেশ হতে চাই। অথচ আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি।
তিনি বলেন, আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ হতে চাচ্ছে। এখানেই হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ রচনা এবং তার সুযোগ্য মেয়ে শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সার্থকতা।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই রাঙ্গুনিয়ার অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন। অনেককে কর্ণফুলী নদীর তীরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার পর লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রঘোনায় পাকিস্তানিদের ক্যাম্প থেকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। পদুয়া ইউনিয়নে একদিনে ১২০০ বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরকম রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন জায়গায় বাড়িঘর জ্বালানো হয়েছে।
নিজের নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালী অংশ) আসনের উন্নয়নের নানা চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ আজকে বদলে গেছে। এই রাঙ্গুনিয়ার চিত্র আপনারা একটু মনে করে দেখুন, ১৫ বছর আগে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার শেষ প্রান্ত থেকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার শেষ প্রান্তে সকালে রাওনা শুরু করলে বিকেল গড়িয়ে যেত। সেঙ্গে খাবারের পোটলা নিয়ে যেতে হতো। সড়কগুলোর এমন করুন অবস্থা ছিল মানুষের কোমর ব্যাথা হয়ে যেত। আর বর্তমানে রাঙ্গুনিয়ারে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যায়।
তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রামের ছেলে আর শহরের ছেলেদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। গ্রামের ছেলেরা আরও বেশি স্মার্ট। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে টেলিভিশন-ফ্রিজ ও ইন্টারনেটের লাইন আগে ছিল না। এখন প্রতিটি পরিবারে টেলিভিশন, ফ্রিজ ও ইন্টারনেট পৌঁছে গেছে। সবকিছু সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উত্তরজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মো. ইদ্রিছ আজগর, মুহাম্মদ আলী শাহ, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান, শফিকুল ইসলাম, আবদুল মোনাফ সিকদার, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার প্রমুখ।