দেহঘড়ি

বেশি লবণ খেলে কী হয়

খাবার লবণ হিসেবে আমরা যে লবণ খাই তা মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড। এই লবণের ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং বাকি ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড। আমরা যে পরিমাণ সোডিয়াম গ্রহণ করি তার বেশিরভাগই আসে খাবার লবণ থেকে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় সব মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ করে থাকেন। পূর্ণ বয়স্ক একজন মানুষ দিনে প্রায় ৪৩১০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করেন। যা ডাব্লিউএইচও নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

অতিরিক্ত সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া বেশি লবণ খেলে হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রিক, ক্যান্সার, স্থূলতা, হাড় ক্ষয়, মেনিয়ার ডিজিজ নামের রোগ হতে পারে। এই অভ্যাস হতে পারে কিডনি রোগের কারণ।

প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লবণ খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এমনকি হাড় থেকেও ক্যালসিয়াম শুষে নিতে পারে সোডিয়াম।

তবে মানুষের জীবনে ব্যস্ততা বাড়ার কারণে এখন অনেকেই প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়ে থাকেন যেগুলোতে অতিরিক্ত পরিমাণ লবণ থাকে। আর অতিরিক্ত লবণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর কারণ এতে সোডিয়ামের মাত্রাও বেশি থাকে।

যতদূর সম্ভব প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও রান্নায় কম লবণ ব্যবহার করা উচিত। রান্নায় কম লবণ ব্যবহারের পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। তারা বলেন, মানবদেহে স্নায়ুতে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখা, মাংসপেশি সংকোচন ও শিথিল করা, শরীরে পানি ও খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অল্প পরিমাণ সোডিয়াম দরকার। এর সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম যথেষ্ট।

লবণ না খেলেও আবার আয়োডিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের জন্য সোডিয়াম ক্লোরাইড বা খাবার লবণ দরকারি এবং অবশ্যই এটা আয়োডিন যুক্ত হতে হবে।

প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মানুষকে প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম বা ৫ গ্রামের কম লবণ খেতে হবে। ২-১৫ বছর বয়সীদের জন্য এই মাত্রা প্রয়োজন অনুযায়ী আরো কমিয়ে আনতে হবে।

বেশি লবণ খেলে যারা কিডনি রোগে ভুগছেন এবং নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে- এমন রোগীদের রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে।

সূত্র: বিবিসি