সারা বাংলা

নৌকার আসনে লাঙ্গল ও ঈগলের লড়াই

জেলার নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলা নিয়ে হবিগঞ্জ-১ আসন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩১ হাজার ৪২২ জন। প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। আসন ভাগাভাগির ফলে নৌকার প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হয়েছে। 

বর্তমানে এ আসনে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী (ঈগল), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহেদ (ট্রাক), ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের মোস্তাক আহমেদ ফারহানী (মিনার), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো. নুরুল হক (গামছা)।

এরমধ্যে নৌকার এ আসনে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মহিলা আসনের সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। তিনি ঈগল পাখি প্রতীক নিয়ে স্থানে স্থানে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাইছেন। অপরদিকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে সাবেক এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবুও ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। উভয় উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও জাপা মিলে যৌথভাবে নেতাকর্মীরা লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চাইছেন।

কেয়া চৌধুরীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ঈগল পাখির জয় ঠেকানো যাবে না। কারণ তিনি এমপি থাকাকালীন সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। যেহেতু নৌকা নেই, তাই ফাঁড়িসহ ১২ চা বাগানবাসী ঈগলকে বেছে নিবে।

এমএ মুনিম চৌধুরী বাবুর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনি এমপি থাকা অবস্থায় স্থানে স্থানে উন্নয়ন করেছেন। এর আগে এ আসন থেকে তিনিসহ লাঙ্গলের প্রার্থী দুইবার জয়ী হয়েছেন।

প্রচণ্ড শীতে হাওড়, গ্রাম ও পাহাড়ি এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনে দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই জমে উঠেছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনায় দুই প্রার্থী। এছাড়া বাকী তিন প্রার্থীর প্রচারণা চোখে পড়ার মতো নয়।

এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু বলেন, লাঙ্গলের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। আমার বিশ্বাস উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে সম্মানীত ভোটারগণ কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আমাকে এমপি নির্বাচিত করবেন।

অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন, এমপি থাকা অবস্থায় স্থানে স্থানে গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। উন্নয়নের স্বার্থে লোকজন আমাকে এমপি দেখতে চায়। ঈগলের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।  

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন এ আসন নৌকার ঘাঁটি। নৌকা নিয়ে এ আসন থেকে ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ (মিলাদ গাজী)। তার আগে মিলাদ গাজীর বাবা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নিবার্চনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১০ সালের ১৯ নভেম্বর দেওয়ান ফরিদ গাজী মৃত্যুবরণ করেন। শূন্য আসনে ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দূর্গে প্রথমবারের মতো হানা দেয় বিএনপি। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ওই উপনিবার্চনে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে পরাজিত করেন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে জাতীয় পার্টি প্রার্থী এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন।

এছাড়া এ আসন থেকে ১৯৭০ সালের নিবার্চনে আওয়ামী লীগের আবদুল আজিজ চৌধুরী, ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান চৌধুরী ছানু মিয়া, ১৯৭৯ সালে জাসদের মাহাবুবুর রব সাদী, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের ইসমত আহমদ চৌধুরী, ১৯৮৮ সালে জাসদের অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির, ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির খলিলুর রহমান চৌধুরী রফি এমপি নির্বাচিত হন।