বিদেশে চীনের দূতাবাসগুলোতে ‘কনস্যুলার স্বেচ্ছাসেবক’ নিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, চীনের ঊর্ধ্বমুখী কূটনীতির অংশ হিসেবে তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্লেষকদের শঙ্কা, ভিন্নমত পর্যবেক্ষণে এসব ‘কনস্যুলার স্বেচ্ছাসেবকরা’ ব্যবহৃত হতে পারে। যদিও তা অস্বীকার করেছে চীন।
সম্প্রতি কনস্যুলার স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর নজরদারি করেছে ইউরোপভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী সেফগার্ড ডিফেন্ডার্স। তাদের প্রতিবেদনের লেখক চুং চিং কোং বলেন, তারা ‘গুপ্তচর’ নয়, কারণ তারা সরাসরি গুপ্তচরবৃত্তি চালায় না। কিন্তু তারা বিদেশি শক্তির পক্ষে কাজ করে।
তিনি ধারণা করেন, ভিন্ন মতাবলম্বীদের লক্ষ্যবস্তু বানাতে তাদের সহায়তা নেওয়া হতে পারে।
চীনের স্টেট কাউন্সিল তাদের নতুন সংবিধানে ‘কনস্যুলার সুরক্ষা ও সহায়তা’ যুক্ত করে। সেপ্টেম্বরে কার্যকর হওয়া আইনের বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে জাপান, ফিনল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, অ্যাঙ্গোলা, মালয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, বতসোয়ানাসহ কিছু দেশে নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং পুরস্কার অনুষ্ঠান সংক্রান্ত নোটিশসহ চীনের সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে ‘কনস্যুলার স্বেচ্ছাসেবক’ নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
জুলাই মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানসবার্গে ২০টিরও বেশি ‘কনস্যুলার স্বেচ্ছাসেবকের’ জন্য একটি বার্ষিক সভা করেছে চীনা কনস্যুলেট জেনারেল। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জেনারেল কনসাল ট্যাং ডংঝং জানান, তিনি আশা করেন চীনা নাগরিকদের স্বার্থে স্বেচ্ছাসেবকরা কনস্যুলেট জেনারেলকে ‘দ্য ফাইভ-স্ফিয়ার ইন্টিগ্রেটেড প্ল্যান’ যৌথ প্রতিরক্ষা ও যৌথ সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং নিরাপত্তা ও বৈধ অধিকার রক্ষার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা চালাতে সাহায্য করবে।
চীনের সরকারি ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের অন্তর্ভুক্ত চীনা বৈশিষ্ট্যের সাথে সমাজতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ২০১২ সালে ‘সমন্বিত পরিকল্পনা’ ঘোষণা করা হয়েছিল।
সেফগার্ড ডিফেন্ডারদের প্রতিবেদন প্রকাশের পর ব্রাসেলসে চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, স্বেচ্ছাসেবক ব্যবস্থায় খারাপ কিছু নেই।
মুখপাত্র আরও বলেছেন, চীনা নাগরিকদের সাথে সম্পর্কিত মামলাগুলো সময়মত ও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে এবং জনসাধারণের কল্যাণের জন্য, বেলজিয়ামে বসবাসকারী ও কর্মরত কিছু সহানুভূতিশীল চীনা স্বেচ্ছায় দূতাবাসকে কনস্যুলার সুরক্ষা প্রদানে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে। স্বেচ্ছাসেবী সেবা দেওয়ার সময় তারা স্থানীয় আইন ও প্রবিধান কঠোরভাবে পালন করেছে। অতীতে, চীন সরকার তার কনস্যুলার স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্কের সমালোচনা থেকে নিজেকে রক্ষা করেছে।