বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমানের সমর্থকদের মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটনসহ গ্রেপ্তারকৃত ৬ জনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক জিনিয়া জাহান এই আদেশ দেন। আদেশে মামলার পুলিশি প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর্যন্ত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে র্যাবের একটি গোয়েন্দা দল তাদের গ্রেপ্তার করে। পরে মঙ্গলবার ভোরে তাদের বগুড়া ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশ দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করে।
মিনহাদুজ্জামন লিটন সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বগুড়া-১ (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী সাহদারা মান্নানের ভাই।
গ্রেপ্তারের পর জামিন পাওয়া বাকিরা হলেন, লিমন (৩২), রায়হান (২৮), রানা (২৬), রাজন (৩৫) ও নিপুন (২৮)। তারা সবাই সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও হত্যা চেষ্টা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি।
এর আগে গত রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল মার্কার কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমানের সমর্থক রেজওয়ানুল রিজভীকে মারধর করা হয়। বর্তমানে রিজভী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পরই সোনাতলার জোড়গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে রিজভীর স্ত্রী নাহিদ নাসরিন সাথী বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটন ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিনসহ ৭ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যান লিটনের নেতৃত্বে জোড়গাছার ভেলুরপাড়া চারমাথা এলাকায় আব্দুল মতিসহ ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি ঈগল মার্কার সমর্থক রিজভীর ওপরে হামলা চালায়। তাকে হত্যার উদ্দেশে লাঠিসোটা দিয়ে মারধর ও মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী নসিমুল বারী হলি বলেন, মিনহাদুজ্জামান লিটন একজন জনপ্রতিনিধি। তার বিরুদ্ধে মামলায় হামলার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে চড়-থাপ্পড়ের অভিযোগ আছে। এইসব কারণ বিবেচনা করে আদালত তাদের জামিন দিয়েছেন।
মামলার বাদী নাহিদ নাসরিন সাথী বলেন, র্যাবের পক্ষ থেকে আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানিয়েছিল। তবে আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে কিনা কিছু জানি না। রিজভী হাসপাতালের আইসিইউতে এখনও সংজ্ঞাহীন আর আসামিরা জামিন পেল? আমার কিছু বলার নেই।
বগুড়া কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমরা আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করেছি। তাদের কারাগারে পাঠানোর আর্জি করা হয়েছিল। তবে মামলার বাদী পক্ষ আহত ব্যক্তির মেডিক্যাল রিপোর্ট বা কোনরকম কাগজ দেখাতে পারেনি। এইসব কারণ বিবেচনা করে আদালত তাদের জামিন দিয়েছে।