ড. জেবউননেছা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক। তিনি এই বিভাগের প্রথম মহিলা সভাপতি হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের প্রথম মহিলা অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগ কমিটির’ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত একাডেমিক কাউন্সিল সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনষ্টিটিউটের নির্বাহী কাউন্সিল সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ড. জেবউননেছা অষ্ট্রেলিয়ান একাডেমি ফর বিজনেস অ্যান্ড লিডারশিপের একজন ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে বিএসএস (সম্মান) এবং এমএসএস পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি লাভ করেন। একই বিভাগ থেকে এমফিল ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
তিনি ভারতের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের গভর্ন্যান্স বিষয়ক পিএইচডি গবেষণা করেন। যেটি দক্ষিণ এশিয়ায় এই বিষয়ে প্রথম গবেষণা তিনি মালয়েশিয়ার পার্লিশ ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। তিনি প্রাবন্ধিক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠক। প্রায় ২৫ এর অধিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৫টি। এছাড়াও তিনি নিয়মিত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে নিয়মিত লিখেন।সম্প্রতি ঢাকায় তার বাসায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা এবং সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে।সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফ বরকতুল্লাহ।
সাইফ: সম্প্রতি আপনার প্রকাশিত একটি গ্রন্থ ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের আলেখ্য’ বেশ আলোচনায় এসেছে। বইটি সম্পর্কে জানতে চাই। ড. জেবউননেছা: আমি বইটি লেখার কাজ শুরু করেছিলাম ২০২০ সালের আগস্টে। ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের নিহতদের স্মৃতি স্বজনরা কীভাবে রক্ষা করছেন, সেসব গল্প আমি আমার এই বইয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের আলেখ্য’ গ্রন্থটি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের প্রায় সব শহিদদের নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ ও বস্তুনিষ্ঠ গবেষণামূলক গ্রন্থ। গ্রন্থটিতে ৭ অধ্যায়ে ২৭টি প্রবন্ধে ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সাল নিয়ে রচিত গ্রন্থাদি,শহিদদের স্বজনদের সাক্ষাৎকার ও বিশিষ্টজনদের সাক্ষাৎকার, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ পত্র-পত্রিকায় বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের সমন্বয়ে ১৫ আগস্টের শহিদদের জীবন ও কর্ম সন্নিবেশিত হয়েছে। গ্রন্থটির প্রথম অধ্যায়ে বিস্তৃত পরিসরে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবন, সমাজজীবন ও রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরা হয়েছে। অন্য অধ্যায়গুলোতে ১৫ আগস্টের এমন শহিদদের কথা বলা হয়েছে যা আমাদের অনেকের অজানা ছিল। বইটি লিখতে গিয়ে বহুবার আমার আবেগকে সংবরণ করতে হয়েছে। এই বই থেকে আগামী প্রজন্ম ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস জানতে পারবে।
সাইফ: ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের আলেখ্য’ গ্রন্থটি লেখার পেছনের গল্প জানতে চাই। ড. জেবউননেছা: ২০২০ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একমাত্র মুখপত্র ‘উত্তরণ’ পত্রিকা সম্পাদনা পরিষদের পক্ষ থেকে আগস্ট, ২০২০ সংখ্যার জন্য ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫-এর নারী শহিদদের জীবন নিয়ে লেখার দায়িত্ব পাই এবং এই বিষয়ে লেখাও জমা দেই। সেই লেখাটি প্রকাশিতও হয়। পরবর্তীতে এই লেখার হাত ধরেই পত্রিকাটির ‘প্রদায়ক’ হিসেবে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছি। নারী শহিদের জীবন নিয়ে অধ্যয়ন করতে গিয়ে দেখি ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫-এর সর্বস্তরের শহিদদের জীবন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কোনো গ্রন্থ নেই। তখন উদ্যোগ নিলাম শুধু ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫-এর সর্বস্তরের সকল শহিদের জীবন নিয়ে একটি আকর গ্রন্থ প্রকাশ করব। যেখানে থাকবে শহিদদের সম্পর্কে শহিদের নিকটজনের স্মৃতিকথা। কেননা, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট যাঁরা ঘাতকদের গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন তাঁদের জীবন ছিল নিজ ক্ষেত্রে উদ্ভাসিত। তাঁরা বেঁচে থাকলে সমাজ, দেশ, রাষ্ট্রে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারতেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তা আর হয়নি। এই স্বজন পরিজনদের হারিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের গুমরে গুমরে কাঁদার শব্দ কখনো কেউ খুঁজিনি। সেই গুমরে কাঁদার শব্দ খোঁজার জন্য ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫-এর শহিদদের নিয়ে নানা রকম তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করি। অজানা তথ্য সংগ্রহ করার পথটি অনেক কঠিন ছিল। কেননা, কোনো কোনো শহিদের জীবন নিয়ে একটি শব্দও কেউ কোনোদিন লিখেননি। শুধুমাত্র আমরা শহিদদের নামটিই জানি। অনেকে সকল শহিদের নাম জানেনও না। এই বন্ধুর পথকে সঙ্গী করে সাহসে বুক বেঁধে কাজে নেমেছিলাম। বিভিন্ন তথ্যানুসন্ধান করতে করতে শহিদের পরিবার পরিজনের সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। প্রথমদিকে সবার ঠিকানা খুঁজে বের করা কষ্টসাধ্য মনে হয়েছে। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। পরবর্তীকালে মনে হয়েছে যত কষ্ট হোক দিন শেষে যদি গ্রন্থটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে পারি তাতেই পরিশ্রমের সার্থকতা।
‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের আলেখ্য’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ
সাইফ: তথ্য সংগ্রহের কাজটি অনেক কঠিন ছিল। কীভাবে করলেন? ড. জেবউননেছা: বিভিন্ন তথ্যানুসন্ধান করতে করতে শহিদের পরিবার পরিজনের সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। প্রথমদিকে সবার ঠিকানা খুঁজে বের করা কষ্টসাধ্য মনে হয়েছে। তথ্যানুসন্ধান করার জন্য কখনো সকালে বেরিয়েছি, সন্ধ্যায় ফিরেছি। অনেক সময় দুপুরের খাবারও ঠিকমত খেতে পারিনি। রাজধানী ঢাকার অসহনীয় যানজটে বসে থেকেছি। কখনো কখনো মানুষের দরজায় কড়া নেড়েছি। কোনো কোনো সময় নিরাশ হয়েছি। এক্ষেত্রে একটি স্মৃতিকথা বলি। সেটা হলো ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের পরিবারের আহত সদস্যদের উদ্ধারকারী রমনা থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আনোয়ার হোসেনের বাসার দরজায় বার বার কড়া নাড়লেও তারা দরজা খুলতে চাননি। একরকম জোর করেই তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করি।তাদের প্রশ্ন করি, তারা কেন আমাকে বারে বারে নিরাশ করেছেন? তাদের উত্তর, এত বছরে কেউ তাদের খবর নেয়নি। হঠাৎ করে আমি কেন? পাওয়া না পাওয়ার দোলাচলে এগিয়ে যায় আমার কাজ। বহু মানুষকে জবাবদিহি করতে হয়েছে কেন এই গবেষণা করছি? কী হবে এই গবেষণা করে? কত টাকা অনুদান পেয়েছি? এই ধরনের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে আমি হাল ছেড়ে দেইনি। আমার উদ্দেশ্য একটিই ছিল, প্রতিটি মানুষের জীবনের মূল্য অনেক। তাঁদের হারিয়ে যাওয়া জীবনকে আমি গ্রন্থের মধ্যে নিয়ে এসে তাঁদের জীবন্ত করে তুলব। হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর গল্প খুঁজে বের করব, এই ছিল আমার প্রতিজ্ঞা।
সাইফ: ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহিদদের আলেখ্য’ গ্রন্থটি লিখতে গিয়ে কারো সহযোগিতা নিয়েছেন? জেবউননেছা: গ্রন্থটির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেশের বিশিষ্টজনদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে হয়েছে। কারণ আমি চেয়েছিলাম, যারা শহিদদের কাছাকাছি ছিলেন, তাদের প্রাণের আকুতিকে স্পর্শ করে লিখব এবং যতটুকু পারব সাক্ষাৎকার গ্রহণ করব। যাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলেই নয়, তাঁদের মধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রাক্তন মহামান্য রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবদুল হামিদ, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণার বিভিন্ন নকশা ও পোস্টার অঙ্কনকারী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের নকশা প্রণয়নকারী, দেশের খ্যাতনামা শিল্পী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর কমিটির সভাপতি হাশেম খান, ইমিরিটাস অধ্যাপক, যিনি উক্ত গ্রন্থের নামকরণ করেছেন, প্রচ্ছদ অঙ্কন করেছেন এবং গ্রন্থটির সহৃদয় মুখবন্ধ প্রদান করেছেন।
সাইফ: এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয় নিয়ে গবেষণা কীভাবে শুরু করলেন? জেবউননেছা: আমার নানা ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। নানা বাড়িতে ছোটবেলায় বঙ্গবন্ধুর বড় ছবি দেয়ালে টাঙ্গিয়ে থাকতে দেখেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নানা বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর ছবি ঝুলতো। আওয়ামী লীগের সুসময় আসার আগেই ১৯৯২ সালে আমার নানা মারা যান। আমাদের বাড়িতে বৈঠক খানায় ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ শিরোনামে সাত বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি দেয়ালে টাঙ্গানো ছিল। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যখন সংখ্যাগরীষ্ঠতা পেলো তখন আমার বাবা কবি ও নাট্যকার মু. জালাল উদ্দিন নলুয়া ‘জয় নৌকা’ নামে একটি নাটক লিখেন। ওই নাটকটি ৭০ সালের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জে মঞ্চস্থ হয়েছে। ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের ফুফু ও জেঠার বাড়ি পাক হানাদাররা পুড়িয়ে ফেলে। শৈশবেই এ কথা শুনেছি।
২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ্যা ইউনিয়নের কমান্ডার তমিজউদ্দিন আহমেদ এর একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিকথামূলক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। আমি ১৯৯৪ সালে ‘একাত্তুরের কথা’ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখি। ০৩.০৩.১৯৮৯ তারিখে আমার লেখা ‘রক্তে আকা পতাকা’ শিরোনামে কবিতা পাঠ করি আমাদের বাড়িতে আয়োজিত সাহিত্য আসরে। ১৯৭১ এ বাবার লিখিত দিনলিপি সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখলাম ও ১৯৭১ এর অনেক গল্প পড়ার সুযোগ পাই। সেখানে দেখা যায় বাবা ১৯৭১ এ জয়বাংলা নামে একটি কবিতা লিখেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ সচেতন পরিবারের সদস্য হিসেবে সাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কিশোর বয়স থেকেই আগ্রহী হই। ১৯৯৬ সালে নারায়ণগঞ্জে আলী আহমেদ চুনকা মিলনায়তন, এখানে স্বরবর্ণ প্রকাশনী আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমাদের পরিবারকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা আবৃত্তি করার জন্য। আমার জন্মই হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ চর্চার মধ্য দিয়ে। আমার জন্ম বছরেই বাবা লিখেন ভাষা আন্দোলনভিত্তিক তত্ত্ব এবং তথ্য সমন্বয়ে প্রথম নাটক ‘বাংলা আমার বাংলা’- যেটি পরবর্তীতে আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
জেবউননেছার সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন সাইফ বরকতুল্লাহ
সাইফ: আপনি গবেষণা শুরু করলেন, অনেক লেখালেখি করছেন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার প্রথম বই কোনটি? জেবউননেছা: আমার প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ ছিল ‘মুক্তিযুদ্ধ: বুদ্ধিজীবীর দৃষ্টিকোন ও অভিজ্ঞতা’। এই গ্রন্থে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান স্যার, রফিকুল ইসলাম স্যার ও জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যারসহ আরও বিশিষ্টজনেরা লিখেছেন। এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করার প্রেরণা পেয়েছিলাম গণবিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কারণ গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে আমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কোর্স দীর্ঘদিন পাঠদান করেছি। এরপর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নেটওয়ার্ক শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হই। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও আমার প্রথম গ্রন্থ সম্পাদনার আর একটি অনুপ্রেরণা। আমার প্রকাশিত দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘আলোকিত নারীদের স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ’। যে গ্রন্থে ২৬ জন আলোকিত নারী লিখেছেন। গ্রন্থটি সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র অন্তর্ভুক্ত। এরপর ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত হয় গবেষণামূলক গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’। অতঃপর বীর বিক্রম,বীর উত্তম এবং বীর প্রতীকদের স্মৃতিকথা নিয়ে সম্পাদনা করি ‘সূর্য সন্তানদের ৭১ এর স্মৃতি’। এছাড়াও ১৯৭১ এর কলম যোদ্ধা কবি মু. জালাল উদ্দিন নলুয়া লিখিত কবিতা সম্পাদনা করি, সম্পাদিত গ্রন্থের নাম ‘বঙ্গবন্ধু, একুশ ও নির্বাচিত কবিতা’।
সাইফ: নতুন প্রজন্মের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী? জেবউননেছা : বাংলাদেশ এক নদী রক্ত পেরিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে।সেই জন্মের সত্যিকারের ইতিহাস জানা জরুরি। বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করার মানসিকতা থাকতে হবে। প্রচুর বই পড়তে হবে। দেশকে মায়ের মতো ভালোবাসতে হবে।
সাইফ: আপনাকে ধন্যবাদ। জেবউননেছা: আপনাকেও ধন্যবাদ। রাইজিংবিডির পাঠকদেরও শুভেচ্ছা।