দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে দেওয়া টিআইবির রিপোর্ট গবেষণালব্ধ নয় এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির ভাষা আর, টিআইবির ভাষা মিলে যায়। বিএনপির ভাষাকে একটু পরিশিলিত করে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি কোনো পক্ষের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে বিভিন্ন জন বলছেন। নির্বাচন নিয়ে এ প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে গতকাল ১৭ জানুয়ারি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এতে টিআইবি উল্লেখ করে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একপক্ষীয় ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এবারের নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত।
ব্রিফিংয়ে টিআইবির প্রকাশিত প্রতিবেদনের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গবেষণালব্ধ বলা হলেও টিআইবি প্রকৃতপক্ষে গবেষণা না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কম শক্তিশালী তথ্যের ওপর প্রেস ব্রিফিং করে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পত্রিকার সূত্রহীন খবরের ওপর নির্ভর করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বিজ্ঞানসম্মত হয়নি। নির্বাচন বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে, কারো এজেন্ডা বাস্তবায়নে এ প্রতিবেদন তৈরি করা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিদেশি সব পর্যবেক্ষক প্রশংসা করেছে। প্রেস কনফারেন্স করে নিজেদের মতামত ও পর্যালোচনা তুলে ধরেছে। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে নতুন সরকারের সাথে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
হাছান মাহমুদ বলেন, হাজারের বেশি প্রার্থী ছিল নির্বাচনে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। প্রতি আসনে গড়ে ৬ জনের মতো প্রতিদ্বন্ধিতা করেছে। মাঠে স্বতন্ত্র ৪০০ প্রার্থী ছিলো। টিআইবির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৪১ আসনে প্রতিদ্ধন্ধীতা ছিল না। এমন দাবি ভিত্তিহীন। মাঠের সাথে এ প্রতিবেদনের কোনো যোগসূত্র নেই।
মন্ত্রী আরও বলেন, ইভিএমে ভোট হলে প্রতিঘণ্টায় বা প্রতি দুই ঘণ্টায় সঠিক রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু ম্যানুয়্যাল ভোটে ২ ঘণ্টা পর পর সঠিক আপডেট দেওয়া সম্ভব নয়। আসল চিত্র পাওয়া গেছে নির্বাচনের পর।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে শক্তি প্রদর্শন করেছে। আইন প্রয়োগ করেছে। এমনকি, নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছে। কঠোরভাবে কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করেছে। আমির হোসেন আমু, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীসহ হেভিওয়েট প্রার্থীদের তলব করেছে। সে কথাগুলো এই প্রতিবেদনে নেই। কমিশনের অর্জনকে ম্লান করতে এটা করা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, টিআইবির মতো সুশীল সমাজের সংগঠনের প্রয়োজন আছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে আমরা সবসময়ই স্বাগত জানাই। কিন্তু, এসব প্রতিষ্ঠান কোনো দলের জন্য কাজ করলে, তা দুঃখজনক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আশা করি টিআইবি নিজের মর্যাদা ধরে রাখবে। কারো মুখপাত্র হয়ে কাজ যাতে না করে।