২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার ‘অষ্টম বছর’ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি করেছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। পরে সংবাদ সম্মেলনে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আইন সংশোধনেরও দাবি তোলা হয়।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত র্যালি হয়। এতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৬ সালে বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নির্মূলের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে এই লক্ষ্য অর্জনে তিনটি দিক-নির্দেশনা দেন। সেগুলো হলো- স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবহার করে একটি তহবিল গঠন করা, তামাকের ওপর বর্তমান শুল্ক-কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণ করা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রধানমন্ত্রী এমন ঘোষণা দেয়ায় তাকে অভিনন্দন জানানো হয়। বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, তামাক ব্যবহারের কারণে অল্প বয়সে আমরা হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছি। আবার এসব রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। যা জিডিপিতে প্রভাব ফেলছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আইন সংশোধনসহ আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আওয়াল রিজভী বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তার ঘোষণা বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ তামাক ব্যবহারের ফলে আমরা বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। একই সঙ্গে অকাল মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই তামাকের এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে আমাদের এখনই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, আজকের এই দিনে দক্ষিণ এশীয় স্পীকার্স সামিটের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে তামাকের ব্যবহার নির্মূল করার ঘোষণা দেন। একই সাথে এই লক্ষ্য অর্জনে তিনটি পদক্ষেপের কথা জানান। কিন্তু এখনো সেগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণে আমরা আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না। তাই অবিলম্বে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)-বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিজ-এর হেড অব প্রোগ্রাম (টোব্যাকো কন্ট্রোল) মো. শফিকুল ইসলাম, সিটিএফকের অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মো. আতাউর রহমান, আব্দুস সালাম মিয়া, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।