নরসিংদীতে কয়েক দিনের তীব্র শৈত্য প্রবাহ ও ঠান্ডার প্রকোপে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত নবজাতক, শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, হাড়কাঁপানো শীতের তান্ডবে নরসিংদী সদর হাসপাতালে বহির্বিভাগে ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। নারী, পুরুষ ও শিশু রোগীদের চাপ বেড়েই চলছে। সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, নিউমোনিয়া, রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে।
শহরের সাঠির পাড়া এলাকার শিখা রানী দাস তার তিন বয়সি ছেলে আবিরকে নিয়ে গত তিনদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, তীব্র ঠান্ডার কারণে প্রথমে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর উঠছে ছেলের। বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা করে কোনো লাভ হয়নি। পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তার এসে দেখে গিয়েছে কয়েকবার। পরীক্ষায় ধরা পড়েছে ঠান্ডার কারণেই ছেলে অসুস্থ হয়েছে। বর্তমান কিছুটা সুস্থ হলেও পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।
শিলা সরকার নামে এক গৃহিণী তার ছেলেকে নিয়ে এসে বলেন, এ বছর প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে। গত পরশু রাত থেকে ঠান্ডার প্রকোপ অনেক বেড়েছে। ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিতে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু হাসপাতালে রোগী বেশি থাকায় ছেলের জন্য বেড মেলেনি তাই মেঝেতেই বিছানা পেতে আছি। ডাক্তার দেখে গিয়েছে, এখন আগের তুলনায় একটু ভালো আছে।
সদর হাসপাতালের আরএমও মোহাম্মদ মাহমুদুল কবির বাসার বলেন, শীতে বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ, নবজাতক ও শিশুদের মধ্যে নানা ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে। আগের চেয়ে আউটডোরে রোগীর চাপ বেড়েছে দুই থেকে তিন গুণ। অধিকাংশ রোগীর শীতের কারণে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, নিউমোনিয়া এবং রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই সময় নবজাতক ও শিশুদের মায়ের কাছাকাছি রাখতে হবে। পাশাপাশি পরিবারের যারা বয়স্ক রয়েছে তাদেরকে গরম পানি খাওয়ানোসহ গরম পরিবেশে রাখতে হবে। ঘরের মেঝে স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় রাখা যাবে না। শীতে তাদের কুসুম গরম পানি খাওয়াতে হবে। সুষম খাবারের পাশাপাশি তাদের ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। কেউ অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে এনে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। শিশুর ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন খাওয়াতে হবে, স্যালাইনের পানি গরম করার পর ঠান্ডা করে খাওয়াতে হবে।