পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫০ আসনের বেসরকারি ফল জানা গেছে। প্রাপ্ত ফলে দেখা যাচ্ছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।
পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রাপ্ত ২৫০ আসনের মধ্যে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৯টি আসন। অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পেয়েছে ৭১টি আসন, আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩টি আসন।
কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন। কিন্তু কোনো দল এখনও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এরফলে পরবর্তীতে পাকিস্তানের সরকার কারা গঠন করতে যাচ্ছে তা এখনও অস্পষ্ট।
সেনা সমর্থন পেয়েও ভোটের মাঠে হোঁচট খেয়েছেন নওয়াজ শরীফ। এর পরও সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বিজয় দাবি করেছেন তিনি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও জোট সরকার গঠনের কথা জানিয়েছেন নওয়াজ।
তিনি বলেন, যদি আমরা একক সংগরিষ্ঠ দল হয়ে সরকার গঠনের সুযোগ পেতাম তবে সেটি আনন্দের মুহূর্ত হতো। যেহেতু একক দল হিসেবে সরকার গঠনের সুযোগ নেই, তাই জোটে যোগ দিতে দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের একমাত্র এজেন্ডা পাকিস্তানের উন্নয়ন।
এদিকে ইমরানও কারাগার থেকে জয় দাবি করেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি একটি ভাষণ ইমরান খানের ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা হয়েছে। ভাষণে ইমরান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে পিটিআই বিজয়ী হয়েছে। পাকিস্তানের জনগণ, আপনারা ইতিহাস গড়েছেন। আমি আপনাদের নিয়ে গর্বিত।’
বিশ্লেষকদের মতে, পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ দেশ পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর বড় প্রভাব রয়েছে। এবারের নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পছন্দের প্রার্থী নওয়াজ শরিফ বলে বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে ছিল গুঞ্জন। তবে সেই সেনাবাহিনীকেই টক্কর দিয়ে বেশি আসন জিতেছে ইমরান খান সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যা এবারের নির্বাচনে বড় চমক হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
জানা গেছে, পিটিআইয়ের নেতারা ইমরান খানের সঙ্গে নির্বাচনের ফল নিয়ে আলোচনা করতে আজ শনিবার আদিয়ালা কারাগারে যাবেন।
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট আসনসংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। এ ছাড়া বাকি ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এসব আসনের মধ্যে ৬০টি নারীদের ও ১০টি সংখ্যালঘুদের।