শরীফুল ইসলামের হ্যাটট্রিক এবং টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে শিরোপাধারী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারানো…দুর্দান্ত ঢাকা বিপিএলের প্রথম ম্যাচে এর চেয়ে বেশি আর কী চাইতে পারতো! কাগজে কলমে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দূর্বল দল। জাতীয় দলের দুই পেসার শরীফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ বাদে দলে বড় কোনো তারকা নেই। মাঠের ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচে চমকে দিয়েছিল। তাই জয়ের আনন্দটাইও ছিল বাঁধনহারা। কিন্তু ওই উৎসব, উন্মাতাল হওয়া যে কেবল এক ম্যাচের জন্য-ই ছিল তখন কেউ কি বুঝতে পেরেছিল?
বিপিএল ‘ট্রেন’ ঢাকা-সিলেট-ঢাকা ঘুরে এখন চট্টগ্রামের গন্তব্যে। অথচ বন্দরনগরীতে পা রাখার আগে রাজধানী ঢাকার দল বিপিএল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিলো। ৯ ম্যাচে ৮টিতেই হার। টানা ৮ ম্যাচ হেরে হারের বিব্রতকর রেকর্ডকেও তারা সঙ্গী করেছে। শেষ ৩ ম্যাচ তাদের জন্য স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার। তবে ঢাকার অধিনায়ক তাসকিন নিজেদের ক্যানভাসকে আরো বড় করে দেখালেন।
দলগতভাবে ঢাকা ব্যর্থ হলেও ব্যক্তিগত অর্জনে পিছিয়ে নেই। বিপিএলে ৯ ম্যাচে ২৬৬ রান করে ঢাকার নাঈম শেখ এখন টপ স্কোরার। যেখানে তার ব্যাটিং গড় ২৯.৫৫। বল হাতে শরীফুল ইসলাম ১৬.১৭ গড়ে পেয়েছেন ১৭ উইকেট। উইকেট সংগ্রহে বাঁহাতি পেসার রয়েছেন শীর্ষে। ব্যাটিং বোলিংয়ে শীর্ষস্থান দখল করে নেওয়া দুই ক্রিকেটার যেন টুর্নামেন্টের শেষটা ভালো করে করতে পারে তাসকিন সেই প্রত্যাশা করছেন।
নিজেদের ক্যারিয়ারের কথাও চিন্তা করার কথা বললেন অধিনায়ক। তাসকিনের চাওয়া, ‘দলে বেশ কিছু খেলোয়াড় তো ভালো খেলেছে। নাঈম শেখ সর্বোচ্চ রান করেছে। শরিফুল সর্বোচ্চ উইকেট। ওরা যদি ভালো শেষ করতে পারে কিছু প্রাপ্তি তো থাকবেই। ভালো শেষ করলে একটু শান্তি পাওয়া যাবে। সবার তো ক্যারিয়ারের বিষয় আছে। ’
সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতির কথাও বললেন তাসকিন। ৯ ম্যাচে ৩৮.৭১ গড়ে ৭ উইকেট পাওয়া তাসকিন বলেন, ‘আইকন ক্রিকেটার হিসেবে প্রত্যাশা তো থাকে আমার কাছে। আমিও যেন একটু ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি।’
দল হিসেবে ঢাকা পারফর্ম করতে পারেনি তা মাঠেই দেখা গেছে। টানা ৮ হার মানে যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স। পেছনের কথা ভুলে তাসকিন কেবল ভালো করার প্রতিশ্রুতি দিলেন, ‘এটা তো টিম গেম। দুজন-চারজন কোনো না কোনো জায়গায় খারাপ খেলেই ফেলছে। নাম নিব না। কারণ এটা টিম গেম। আজ এ খারাপ করেছে, কাল ও । একদিন আমি। এভাবে আমরা খারাপ করেছি। জেতা ম্যাচগুলো দূর্বলতার কারণে হেরে গেছি। এটা অবশ্যই ভালো অনুভূতি নয় অবশ্যই। আমাদেরও পরিবার আছে। তারাও জিজ্ঞেস করে, জিততে পারছো না কেন? ব্যাটিং বা বোলিং কোন জায়গায় হেরেই যাচ্ছে।’
‘টুর্নামেন্টের ৭০ ভাগ শেষ। ওভারঅল দুইটা ম্যাচ ছাড়া বেশিরভাগ ভালো ক্রিকেট খেলা হয়নি। ব্যাটিংয়ে বেশিরভাগ ম্যাচে আমরা ফেল করেছি। আমার মনে হয় আরো ভালো ক্রিকেট খেলা উচিত ছিল। তাছাড়া হারতে থাকলে মোরালি ডাউন থাকে। তখন কিছু না কিছু মিসটেক হয়েই যায়। এখন দোষ বের করলে তো অনেক সমস্যা বের হবেই। তিনটা ম্যাচ আছে, ভালো ক্রিকেট খেলে যতটা শেষ করা যায়। ফ্রাঞ্চাইজিরা তো প্রত্যাশা করে আমরা জিতি।’ – যোগ করেন তাসকিন।