রহস্যময় স্পিনার হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আভির্ভাব হয়েছিল তার। কিন্তু চাকিং-ইনজুরি তাকে ঠেলে দেয় চার বছর পেছনে। এবার সুযোগ পেয়েই আলিস আল ইসলাম কাজে লাগালেন। তাতে প্রথমবার ডাক পেয়ে গেলেন জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে।
আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও দুই ওয়ানডের জন্য দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাঈম শেখসহ বেশ কয়েকজন। প্রথমবার ডাক পেয়েছেন আলিস আল ইসলাম। দুই স্কোয়াডের কোনোটিতেই নেই সাকিব আল হাসান।
টি-টোয়েন্টি দলে ঢুকেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাঈম শেখ, এনামুল হক বিজয়, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও আলিস আল ইসলাম। বাদ পড়েছেন রনি তালুকদার, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ ও তানভীর ইসলাম।
ওয়ানডেতে ঢুকেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম। বাদ পড়েছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব, হাসান মাহমুদ ও রাকিবুল হাসান।
চোখের সমস্যায় ভুগতে থাকা সাকিবের এই সিরিজের খেলা নিয়ে সংশয় ছিল। এখন বাকি এক ওয়ানডে ও দুই টেস্টে দেখা যায় কী না সেটাই দেখার। সাকিব না থাকয় দলে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সুযোগ পান তাইজুল ইসলাম। তিনি সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেন ২০১৯ সালে। বিপিএলে পাঁচ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
প্রথমবার ডাক পাওয়া আলিসের উত্থান হয়েছিল ২০১৯ বিপিএলে হ্যাটট্রিক দিয়ে। এরপর চাকিংয়ের অভিযোগ, ইনজুরি আলিসকে চার বছর দূরে ঠেলে দেয়। চার বছর পর ২০২৪ সালের দশম বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স সেই সুযোগ এনে দেয়। আলিস সুযোগ পান, লেখেন প্রত্যাবর্তনের অসাধারণের কাব্য। অসাধারণ বোলিং করে মাত্র ১৩০ রান করা কুমিল্লাকে জয় এনে দেন ৭৯ রানের! ৪ উইকেট নেন মাত্র ১৭ রান দিয়ে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে নেন ৮ উইকেট। ইকোনমি ৬.৬৮। এবার সুযোগ পেলেন জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে।
বিপিএলে দুর্দান্ত খেলা মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টিতে ফিরবেন এমন একটা আলোচনা ছিল। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। তিনি সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেন ২০২২ সালের এশিয়া কাপে। এরপর নেতৃত্ব হারান, দল থেকেও বাদ পড়েন। এবারের বিপিএলে ৮ ম্যাচে তিনি ৩০.৬৭ গড়ে ১৮৪ রান করেন। ফিফটি হাঁকান দুটি। সর্বোচ্চ ৭৩ রান।
নাঈমও ২০২২ এশিয়া কাপ খেলেন সবশেষ। এরপর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আর সুযোগ পাননি। এবারের বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে খেলছেন দারুণ। তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ২৬৬ রান। দুই ফিফটিতে ১২৭.২৭ স্ট্রাইক রেটে এই রান করেন নাঈম।
মাহমুদউল্লাহ-নাঈমের মতো ২০২২ এশিয়া কাপে সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলা এনামুল হক বিজয়ও ডাক পেয়েছেন। তিনি ২২৮ রান নিয়ে খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আগামী ১ মার্চ ঢাকায় আসবে শ্রীলঙ্কা দল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৪ মার্চ। পরের দুই ম্যাচ ৬ ও ৯ মার্চ সিলেটেই হবে। ১৩, ১৫ ও ১৮ মার্চ তিনটি ওয়ানডে হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এরপর প্রথম টেস্ট সিলেটে শুরু হবে ২২ মার্চ। আর দ্বিতীয় টেস্ট ৩০ মার্চ থেকে হবে চট্টগ্রামে।
টি-টোয়েন্টি দল: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, তাওহীদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, শেখ মাহেদী হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাইজুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও আলিস আল ইসলাম।
প্রথম দুই ম্যাচের ওয়ানডে দল: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, তানজিম হাসান সাকিব, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিদ হাসান তামিম ও মোস্তাফিজুর রহমান।