রাজধানীর সাভারে আশুলিয়ায় ভুল চিকিৎসায় মিজানুর রহমান (৩৬) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটির বিরুদ্ধে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (আ্যানেস্থেশিওলজি) ডা. মোহাম্মদ নাজমুল হুদা মিঠুকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মেডিক্যাল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. আরমান আহমেদ, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. মোজাম্মেল হক ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাইদুল ইসলাম।
কমিটি গঠনের চিঠিতে বলা হয়, ১২ ফেব্রুয়ারি দি-ল্যাব এইড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর সঠিক কারণ তদন্তে কমিটি গঠন করা হল। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা বলেন, তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পাঁচ কর্ম দিবস সময় দেওয়া হয়েছে। তারা যাবেন। এরপর প্রতিবেদন দেবেন। স্বাস্থ্য সেবায় অপরাধ যেখানেই হবে সেখানে জিরো টলারেন্স। সঠিক পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার জামগড়া ছয়তলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দি-ল্যাব এইড হাসপাতালে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।
মৃত মিজানুর রহমান সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় থেকে হোটেল ব্যবসা করতেন। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
মৃতের পরিবার জানায়, পিত্তথলিতে পাথর অপসারণে অস্ত্রোপচারের জন্য রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সোয়া ৮টার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাকিফ রহমান তার অস্ত্রোপচার করেন। এরপর থেকেই বমি শুরু হয় তার। সকালের দিকে ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়ায় নার্স ডাকলে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয় তাকে। এরপরও ব্যথা না কমায় আরও দুইটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপরই তার মুখ ও নাকে ফেনা বের হয়ে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন নার্সরা এসে দ্রুত তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে অন্য হাসপাতালে নিতে বলে। তখন নবীনগর কেন্দ্র হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান তিনি আগেই মারা গেছেন।
মৃতের ছোট ভাই রিপন হোসেন বলেন, পিত্তথলির অপারেশন করার জন্য তাকে দি-ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে অপারেশন করার পর সারারাত বমি করেছে। এজন্য নার্স ডাকা হয়েছে। নার্স প্রথম ইনজেকশন দেওয়ার পর তার চেহারা সবুজ হয়ে গেছে। আরও ব্যথা বাড়ছে। এরপর আরো একজন আসছে। তিনি ডাক্তার ও না, নার্সও না। ওই ব্যক্তি আরও দুইটা ইনজেকশন দিয়েছে। ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে সে মারা যায়। মারা যাওয়ার পরে যারা মহিলা নার্স ছিল। তারা লাশ তাড়াতাড়ি বের করে দিয়ে বলে, অন্য মেডিক্যালে নিয়ে যান। অন্য মেডিক্যালে নিয়ে গেছি তো তারা বলছে এ তো মৃত।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাকিফ রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে হাসপাতালে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।