পাহাড়ে বল সুন্দরী বরই চাষ করে লাখপতি হয়েছেন রাঙামাটির কৃষক সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। ২০১৬ সালে নিজের ১০ একর জমির ৫ একরে বরইয়ের চাষ শুরু করেন তিনি। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই অর্থনৈতিকভাবে তিনি নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
রাঙামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের সোনারাম কার্বারী পাড়ার বাসিন্দা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। দীর্ঘদিন চেষ্টার পর পাহাড়ি পতিত থাকা নিজের জমিতে বিলাতি ধনিয়া পাতা চাষ শুরু করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন ফল চাষে আগ্রহ বেড়ে ওঠে সুশান্তের মধ্যে। এরই অংশ হিসেবে নিজের জমিতে ৫০০টি বল সুন্দরী বরই গাছের চারা রোপণ করেন। অক্লান্ত পরিশ্রমের পর গাছে ফলন আসতে শুরু করে। গত মৌসুমে গাছ থেকে ১০ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছিলেন সুশান্ত। বাগানের কর্মচারী এবং অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে অনেক টাকা লাভ হয়েছিল তার। অর্থনৈতিক মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি নিজের বাগানে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন এই কৃষক।
বাগানে কাজ করে পরিবার নিয়ে ভালো আছেন বলে জানান সুশান্তের বাগানের শ্রমিকরা। তারা জানান, মালিকের কাছ থেকে শিখে নিজেদের পতিত জমিতে তারাও বরই গাছ রোপণ করবেন।
সুশান্ত বরইয়ের পাশাপাশি সুপারি, ড্রাগন, কলা, পেঁপে, মাল্টা, নারিকেল, লটকন, লিচু, কাঁঠাল এবং সবজির মধ্যে বেগুন, টক ফলসহ ২০ ধরনের ফলের চাষ করেছেন।
সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘আমার বাগানের মোট আয়তন ১০ একর। ২০১৬ সালে বাগানটি শুরু করি। প্রথমে ৫ লাখ টাকা দিয়ে বাগানটা শুরু করেছিলাম। এই বাগানে বল সুন্দরী (বরই), ড্রাগন, মাল্টা ও লটকনসহ ২০ ধরনের ফল গাছ আছে। আমার বাগানের উন্নয়নে রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। আমি বাগান থেকে ১০ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। এবার প্রায় ৫ লাখ টাকার বরই বিক্রি হবে বলে আশা করছি।’ এবারও মৌসুমের শুরুতে ৫০ হাজার টাকার বড়ই বিক্রি করেছেন বলেও জানান সুশান্ত।
বাগান মালিক সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
রাঙামাটি সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, সুশান্ত রাঙামাটি সদরের একজন ভালো উদ্যেক্তো। তার ১০ একর জায়গার মধ্যে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে বরই গাছ রয়েছে। এবছর তার বাগানে ৪-৫ টন বরই আবাদ হতে পারে। সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যার মতো কৃষির উন্নয়নে যারা কাজ করছেন তাদের সহযোগিতার জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।