ইন্দোনেশিয়ার তরুণী ইফহা। কাজের সুবাদে থাকেন সিঙ্গাপুরে। সেখানেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশি তরুণ শামীম মাদবরের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর একে অন্যের সঙ্গে করেন দেখা। দুই জনের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এভাবেই কেটে যায় দুই বছর। পরস্পরের ওপর আস্থা রেখে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বড় কেশবপুর গ্রামে জাঁকজমক আয়োজনে শামীম-ইফহা’র বিয়ে সম্পন্ন হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিঙ্গাপুর থেকে গত জানুয়ারি মাসের ৩০ তারিখে বাড়ি আসেন শামীম মাদবর। বাড়িতে এসে ইফহা’র সঙ্গে নিজের প্রেমের কথা পরিবারকে বলেন তিনি। একই সঙ্গে ইফহাকে বিয়ে করার কথাও বলেন তিনি। প্রথমে শামীম মাদবরের পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাননি। ইফহার সঙ্গে কথা বলেন তারা। পরে পরিবার বিয়েতে মত দেয়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন ইফহা। শামীম মাদবরের পরিবার তাকে গ্রহণ করে। আজ শুক্রবার জাঁকজমকভাবে শামীম মাদবর ও ইফহা’র বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সালমা আক্তার নামে শামীম মাদবরের নিকট এক আত্মীয় বলেন, ইফহা ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দা। তিনি কাজের জন্য সিঙ্গাপুরে থাকেন। ওর পরিবারের সবাই ইন্দোনেশিয়াতে থাকেন। শামীম সিঙ্গাপুর থাকেন প্রায় ৬ বছর ধরে। ওখানে থাকা অবস্থাতেই ইফহা’র সাথে শামীমের পরিচয়। আমরা ফোনে ওই মেয়ের সাথে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। মেয়ে খুবই ভালো। বাড়ির লোকরা প্রথমে বিয়েতে মত না দিলেও পরে সবাই রাজি হন। মেয়ের পরিবারের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। তারাও রাজি। গত ১৭ তারিখে ইফহা বাংলাদেশে আসেন।
এদিকে, বিদেশি তরুণীর বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। প্রায় ৮০০ মানুষের খাবার আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান।
প্রতিবেশীরা বলেন, বিদেশি মেয়ের সঙ্গে বিয়ের ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। মেয়েকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসে ভিড় করেছেন।
শামীম মাদবরের বাবা লাল মিয়া মাদবর বলেন, বিদেশি মেয়েকে আমার ছেলে পছন্দ করেছে। মেয়েও ছেলেকে পছন্দ করে। আমরা মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও বিয়েতে রাজি হয়েছেন। শামীম আসার কিছুদিন পর মেয়েটিও বাড়িতে আসে। শুক্রবার শামীম ও আমার ছোট ছেলে সুমনের একত্রে বিয়ে দিয়েছি। এক সঙ্গে অনুষ্ঠান করেছি। সবাই আনন্দিত। এখন ওরা ভালো থাকুক এই দোয়া করি।
শামীম মাদবর বলেন, ইফহা’র বাড়ি ইন্দোনেশিয়ায়। সে সিঙ্গাপুর থাকে। আমিও সিঙ্গাপুরে থাকতাম। প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের পরিচয় হয়। পরে দেখা হয়। ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। আমাদের কারো পরিবারই রাজি ছিল না বিয়েতে। আমরা পরস্পরের পরিবারকে বুঝিয়েছি। পরে তারা বিয়েতে রাজি হন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ের জন্যই ইফহা বাংলাদেশে আসে।
ইফহা বলেন, আমি খুবই খুশি শামীমকে পেয়ে। তিনি খুবই ভালো মনের মানুষ। আমরা সিঙ্গাপুর যাবো। ওখান থেকে ইন্দোনেশিয়ায় বেড়াতে যাবো বাবা-মায়ের কাছে।