সারা বাংলা

পাপমোচনের আশায় বংশাই নদীতে ‘ডুবের মেলা’

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সৈয়দামপুর গ্রামে বংশাই নদীতে হয়ে গেলো দিনব্যাপী ডুবের মেলা। ঐতিহ্যবাহী এ মেলা যুগ যুগ ধরে হচ্ছে। মাঘী পূর্ণিমায় এ মেলা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এ নদীতে স্নান করলে পাপমোচন হয়।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষ পূজা ও স্নান করছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে স্নান উৎসব। সব বয়সী মানুষ ম্নান উৎসবে অংশ নেন। 

স্নান উৎসবে অংশ নেওয়া পুণ্যার্থীরা এ প্রতিবেদককে বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পাপমোচনের লক্ষ্যে ভোরে মানত ও স্নান করেন। এখানে স্নান করলে সাড়া বছরের পাপ মোচন হয়। মনের আশা পূরণ হয়। এই স্নানে অংশ নিলে পুণ্য মেলে। 

ব্রিটিশ শাসনামলে ওই স্থানে ভক্ত সাধু নামে খ্যাত এক সন্যাসীর (মাধব ঠাকুর) মূর্তি স্থাপন করে পূজা শুরু করা হয়। এ পূজা উপলক্ষে তখন থেকে ডুবের মেলা হচ্ছে। মেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ম্নান উৎসব চলে। 

স্নানে অংশ নেওয়া সুজন সরকার বলেন, আজকে আমরা মাঘী পূর্ণিমার মেলায় আসছি। আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি পুণ্যস্থান। ১০০ বছর ধরে এই স্নান উৎসব চলছে। এখানে স্নান করলে মনের বাসনা পূরণ হয়।

দেবাশীষ দাস বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন যে, মাঘী পূর্ণিমার তিথিতে উত্তর বাহিত জলে স্নান করলে সাড়া বছরের পাপ মোচন হয়। অনেকের মনে আশা থাকে যে, স্নান করলে তাদের মনের আশা পূরণ হয়।

মিষ্টি বিক্রেতা মেহেদী হাসান বলেন, ৩০ বছর ধরে এ মেলায় আসি। মেলায় ভালোই মিষ্টি বিক্রি হয়। মেলায় ৯ থেকে ১০ মণ মিষ্টি বিক্রি করা যায়। মেলায় অনেক লোকের সমাগম হয়।

পুরোহিত রবীন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, অনেক আগে এ স্নান শুরু হয়েছে। এ স্নানকে বলে মাঘী পূর্ণিমার গঙ্গাস্নান। ৩০-৪০ জন পুরোহিত এই স্নানে এসেছেন। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসেছেন স্নানে অংশ নেন। পুণ্যার্থীরা মনের বাসনা পূরণে এখানে আসেন। এ নদীতে ডুব দিলে তাদের মনের বাসনা পূর্ণ হয়।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আল মামুন বলেন, অনেক আগে থেকে এ মেলা হচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মাঘী পূর্ণিমায় ডুবের মেলা উদযাপন করে থাকেন। মেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসেন।