চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয়। পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই মাহফিল। সুতরাং, এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন তবে, নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। দিল থেকে নিজেকে আল্লাহর কুদরতি পায়ে বিলীন করে দিতে হবে। সদা-সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর ওলী হয়ে বিদায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।’
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জোহরের নামাজের পর তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত চরমোনাইর বাৎসরিক মাহফিলের উদ্বোধনী বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন। বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠসহ ৬টি মাঠে শুরু হওয়া এই মাহফিল আগামী শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।
মাহফিলে অংশ নিয়েছেন ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মুফতি আল্লামা হাবিবুর রহমান খায়রাবাদী। এছাড়াও এবছর সৌদি আরব ও পাকিস্তানের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করবেন বলে জানা গেছে।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে মাহফিলে আগত মুসল্লিদের ১০ হাজার হালকায় বিভক্ত করে হাতে-কলমে সালাত ও ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়ে বাস্তব প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মাহফিলে আগত মুসল্লিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে আরো ৪০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে সেবা পরিচালিত হচ্ছে। ৬টি অ্যাম্বুলেন্স ও ১ টি স্পিডবোর্ড মাহফিল হাসপাতালে কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীকে তাৎক্ষণিক মাহফিল হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য নিযুক্ত রয়েছে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। ছয়টি মাঠে মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত রয়েছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লিদের খাবারের মাঠের চারিদিকে সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থাসহ রয়েছে সহস্রাধিক টয়লেট, ওজু এবং গোসলের ব্যবস্থাপনা। তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের প্রথমদিন বুধবার বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় দিন সারাদেশ থেকে আগত ওলামায়ে কেরামদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন ও শেষদিন সকালে সারাদেশ থেকে আগত ছাত্র-জনতাকে নিয়ে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মাহফিলে আগত যুবক, শ্রমিকদের নিয়ে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ এবং ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজন করেছে বিশেষ আয়োজন।