এমন কিছু হতে পারে তামিম ইকবাল নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি। জাতীয় দলের টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ তাইজুল ইসলাম। জাতীয় সম্পদ হিসেবে তামিম যাকে মূল্যায়ন করেন। তাকে বিপিএলের ড্রাফটে দলভুক্ত করায় পাশের এক টেবিল থেকে অট্টহাসি হেসেছিল আরেক দল! পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে বলে সেদিন নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারেননি তামিম। তবে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তাইজুলকে ‘বাজির ঘোড়া’ বানিয়ে মাঠেই জবাব দিয়েছেন দৃঢ়ভাবে। শেষ পর্যন্ত হাসি ফুটেছে দুজনের মুখে।
শুক্রবার বিপিএলের দশম আসরের পর্দা নেমেছে। বরিশাল প্রথম পেয়েছে শিরোপার স্বাদ। জিতে গেছেন তামিম-তাইজুল জুটি। দুজনের মধ্যে বাড়তি বন্ধুত্বের কথা অজানা নয় কারোই। তবে মাঠের ক্রিকেটে দুজনই পেশাদার। দলের জন্য ভালো কোনটা হবে দুজনই বিবেচনা করেছেন সবার আগে। তাই তো তাইজুল দলে থাকার পরও শ্রীলঙ্কার স্পিনার দিনুথ ওয়েলালাগেকে খেলিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা কেশভ মহারাজকেও যুক্ত করে। সঙ্গে তাইজুলের সঙ্গে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান ছিলেন।
সব মিলিয়ে প্রতিযোগিতা, পারফর্ম করে তাইজুলকে পেতে হয়েছে বরিশালের একাদশে জায়গা। নিজেকে সেভাবে প্রমাণও করেছেন। বিপিএলে ৯ উইকেট নিয়েছেন। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন মাত্র ৫.৬৫। টুর্নামেন্টে অন্তত ৫ উইকেট শিকারি বোলারদের মধ্যে তার চেয়ে কৃপণ বোলিং করেছেন কেবল সিলেট স্ট্রাইকার্সের সামিত প্যাটেল । ফাইনালেও কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখে ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচ করেন।
এমন পারফর্মারকে তামিম সবার সামনে আনতে চেয়েছিলেন ম্যাচ শেষে। এজন্য সংবাদ সম্মেলনে তাকে হাজির করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অধিনায়ককে বলেকয়ে আবার ড্রেসিং রুমে ফিরে যান বাঁহাতি স্পিনার। তবে তামিম সংবাদ সম্মেলনে তাইজুলকে নিয়ে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করেননি।
তামিম বলেছেন, ‘আমাকে এটা বলতেই হবে… তাইজুল… হয়তো আমার বলা উচিত নয়, তবে মনে হচ্ছে, এটা বলার উপযুক্ত সময় এখনই। আমি যখন ড্রাফটে ওকে দলে নিয়েছি, একটা নির্দিষ্ট দল ছিল, যারা হাসাহাসি করছিল। আমার এত খারাপ লাগছিল, এত খারাপ… একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটরকে আমি দলে নিয়েছি, অথচ একটা দল হাসছিল যে তাকে নিয়েছি।’
তামিম ওই দলটির নাম না বললেও বরিশালের খেলোয়াড় ও ম্যানেজমেন্টের থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাফটের দিনে তাইজুলকে নেওয়ার পর রংপুর রাইডার্সের টেবিলে বসা কয়েকজন হাসাহাসি করেছিলেন। যা একদমই পছন্দ হয়নি তামিমের। বিপিএলের পারফরম্যান্স দিয়ে তাইজুল সীমিত পরিসরের দলে ঢুকেছেন।
সতীর্থর অর্জনে খুশি তামিম, ‘আমরা একটা সময় কেশভ মহারাজকে আনি। তাইজুল ভালো করেছে, তারপরও ওকে না খেলিয়ে কেশভকে খেলিয়েছি, সেও ভালো করেছে। এরপর তাইজুল আবার ফিরে অসাধারণ করেছে। এখন ওর জন্য আমি খুবই খুশি যে এত বড় অবদান রাখতে পেরেছে। ওর এই পারফরম্যান্সের কারণে বিসিবি ও নির্বাচকরা ওকে বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে নিয়েছে।’