অর্থনীতি

‘ট্রেকহোল্ডার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি পুঁজিবাজারের গেটকিপার’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেছেন, পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি ট্রেকহোল্ডারদের এবং অনুমোদিত প্রতিনিধিদের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। কারণ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আপনাদের কাছেই আসে। আপনারাই হচ্ছেন পুঁজিবাজারের গেটকিপার।

রাজধানীর ডিএসই টাওয়ারে ৪ ও ৫ মার্চ দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত ট্রেকহোল্ডারস কোম্পানির প্রতিনিধি, অনুমোদিত প্রতিনিধি এবং কমপ্লায়েন্স অফিসারদের জন্য “সিকিউরিটিজ রিলেটেড ল’স” এবং “ইফেক্টিভ কমপ্লায়েন্স অব সিকিউরিটিজ রিলেটেড ল’স” শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।

এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে বিভিন্ন আইন-কানুন, বিধি-বিধান প্রণয়ন করে থাকে। আমাদেরকে ওই আইন-কানুন, বিধি-বিধান পরিপালন করতে হয়। কমিশন এবং এক্সচেঞ্জের সাথে তাদের সরাসরি যোগাযোগ খুবই কম হয়। তাই আপনারা বিনিয়োগকারী এবং এক্সচেঞ্জের মধ্যে ব্রিজ বা সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন। যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে পারেন, তবে কমিশন এবং এক্সচেঞ্জ উভয়ই নিশ্চিত থাকতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখার মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে বৃহত্তর পরিসরে উপস্থাপন করাই হচ্ছে ডিএসইর লক্ষ্য। এখানে যারা উপস্থিত আছেন সবাই আর্থিক খাতের লোক। দেশের সার্বিক অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সার্বিক পুঁজিবাজার নিয়ে গর্ব করার মতো উচ্চতায় পৌঁছতে আরও সময় লাগবে। তাই আমাদের অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।

ডিএসইর এমডি বলেন, আইনে যে মনিটরিং এবং এনফোর্সমেন্ট করতে বলা হয়েছে সেটা পালন করা সবার দায়িত্ব। যে রুলস, রেগুলেশনগুলো এসেছে, আমাদের উদ্দেশ্য হলো কর্মশালার মাধ্যমে আপনাদের এই রুলস এবং রেগুলেশনগুলো জানানো যাতে আপনারা ভুলগুলো সংশোধন করে এই সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং অবদান রাখতে পারেন।

পরিশেষে ট্রেকহোল্ডারদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ড. তারিক বলেন, বেশকিছু রুলস রেগুলেশন বিষয়ে ইতোমধ্যেই বিএসইসিতে মতামত পাঠানো হয়েছে এবং বেশকিছু প্রস্তাবনা আমাদের হাতে আছে, যা আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করছি। আগামীতে পর্যালোচানা শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে এবং পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করবো। আমরা সবাই একসঙ্গে মিলিত হয়ে কাজ করবো।

অনুষ্ঠানে ডিএসই’র প্রধান রেগুলটরি কর্মকর্তা (সিআরও) খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহামমদ আলোচ্য বিষয়ে পেপার উপস্থাপন করেন। তিনি সিকিউরিটিজ আইন প্রতিপালনের প্রয়োজনীয়তা এবং লঙ্ঘনের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে বলেন, এই অধিবেশনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো গ্রাহক বা বিনিয়োগকারীদের তহবিলের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ক্লায়েন্ট বা বিনিয়োগকারীদের সিকিউরিটিজের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করা, ট্রেকহোল্ডার কোম্পানিগুলোর এমডি, সিইও এবং কমপ্লায়েন্স কর্তৃপক্ষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। একই সাথে বেশ কিছু অসম্মতিও তুলে ধরেন এর মধ্যে, কনসোলেটেড কাষ্টমার অ্যাকাউন্টে ঘাটতি, ক্লায়েন্টদের সিকিউরিটিজে ঘাটতি, ডুপ্লিকেট বা একাধিক ব্যাক অফিস সফটওয়্যারের ব্যবহার, শাখা বা ডিজিটাল বুথ বা এক্সটেনশন অফিসের অনঅনুমোদিত কার্যক্রম, কমিশন বা ডিএসইকে না জানিয়ে শাখা বা ডিজিটাল বুথ বা এক্সটেনশন অফিস বন্ধ বা স্থানান্তর, কমিশন বা ডিএসইতে রিপোর্ট না করে ইন-চার্জ বা কমপ্লায়েন্স অফিসার বা অনুমোদিত প্রতিনিধিদের পরিবর্তন, টিডাব্লিউ এর অনঅনুমোদিত ব্যবহার ইত্যাদি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিএসইর জেনারেল ম্যানেজার মো. ছামিউল ইসলাম।