গত ২০ বছরে ১৬ জন নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছেন মধ্য বয়সী এক পুরুষ। ১৭তম বিয়ে করতে চাইলে বর্তমান স্ত্রী রিনা বেগম বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারধর করেছেন বিয়ে পাগল ওই স্বামী। ভুক্তভোগী স্ত্রী রিনা বেগমকে গত সোমবার (৪ মার্চ) রাতে বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বিয়ে পাগল শহিদুল ইসলাম বরগুনার আমতলীর কুকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব কুকুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে আগের ১৫ স্ত্রীকে অকারণে তালাক দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
স্ত্রী রিনা বেগম ও স্থানীয়রা জানান, শহিদুল ইসলাম প্রতিবছর বিয়ে করেন। বছর শেষ হতে না হতেই তিনি স্ত্রীদের তালাক দেন। গত ২০ বছরে তিনি ১৬টি বিয়ে করেছেন। ১৫ জন স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি রিনাকে বেগমকে বিয়ে করেন। তার চার মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ১৭তম বিয়ে করতে শহিদুল ইসলাম নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করেন রিনা বেগমকে। গত সোমবার দুপুরে বিয়েতে বাধা দেওয়ায় রিনা বেগমকে মারধর করেন শহিদুল ইসলাম। পরে স্বজনরা রিনা বেগমকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
রিনা বেগমের অভিযোগ, ‘আমি জানতাম না সে আমার আগেও ১৫ জনকে বিয়ে করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে তাদের তালাক দিয়েছে। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই তিনি আমাকে অকারণে মারধর শুরু করেন। এরপর জানতে পারি আমি তার ১৬তম স্ত্রী। বছর না ঘুরতেই তিনি আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। মূলত তিনি বিয়ে পাগল। বিয়ে করাই তার নেশা। মেয়েদের ফুসলিয়ে তিনি সব কিছু গোপন রেখে বিয়ে করেন। পরে তালাক দেন।’
পূর্ব কুকুয়ার গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শহিদুল ইসলাম একের পর এক বিয়ে করে আর তালাক দেয়। এতে আমরা এলাকার লোকজন বিরক্ত। আমাদের এলাকার মানুষ পার্শ্ববর্তী এলাকায় গেলে মানুষ হাসাহাসি করে।
রিনা বেগমের মা মাজেদা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে বিয়ে করছে। আমরা জানতাম না শহিদুল এমন। এখন আবারো বিয়ে করতে চায়। আমার মেয়ে বাধা দেওয়ায় তাকে মারধর করছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবি করছি।
শহিদুল ইসলাম স্ত্রীকে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, বিয়ে করা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে কারোর কথা আমি শুনতে চাই না।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, মৌখিকভাবে ঘটনা শুনেছি। রিনা বেগমের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।