শেরপুরের নকলা উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় আপিলের মাধ্যমে সাজা মওকুফ ও জামিন পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন।
শনিবার (৯ মার্চ) রাতে শেরপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক রানা সরকারি অফিসের গোপনীয় শাখায় অনুপ্রবেশ করে হট্টগোল, সরকারি কাজে বাধা ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি এবং সেইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে অশালীন আচরণ করলে আদালত তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়।
এ সাজা প্রদানের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শেরপুর প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠন। শনিবার শেরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় যখন সরকার স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমের অধিকার নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে কাজ করছে, ঠিক তখন বিতর্কের ঊর্ধ্বে না হলেও একজন গণমাধ্যমকর্মীকে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেয়ার ঘটনা আমাদের বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন করেছে। এ ঘটনায় মফস্বলের সাংবাদিক সমাজ ফুঁসে উঠছে।’
তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, শেরপুরের জেলা প্রশাসন স্মার্ট শেরপুর গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। তাদের যে কোনো ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে শেরপুর প্রেস ক্লাবসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা সহযোগিতা করে আসছেন। তাই গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে চমৎকার ও সহযোগী সম্পর্ক বহাল এবং স্বাধীন-সুষ্ঠু সাংবাদিকতার অঙ্গন রক্ষার স্বার্থে জেলা প্রশাসন সাজাপ্রাপ্ত সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার দ্রুত মুক্তিসহ উদ্ভূত অবস্থার অবসান করতে কার্যকর প্রদক্ষেপ নেবে।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দৈনিক দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানার কারাদণ্ডের ঘটনা তদন্ত করছেন তথ্য কমিশনার ও সাবেক বিচারপতি শহিদুল আলম ঝিনুক। আজ রোববার (১০ মার্চ) সকালে শহিদুল আলম ঝিনুক শেরপুরে আসেন।
পরে তিনি শেরপুর সার্কিট হাউসে গিয়ে সেখানে প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুমের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি জেলখানায় সাংবাদিক রানার সঙ্গে কথা বলেন। আজ সারা দিন তিনি এ ঘটনার তদন্ত করবেন। এরপর আগামীকাল সোমবার (১১ মার্চ) তথ্য কমিশনে তাঁর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।