লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমণীমোহন ইউনিয়নে সেতুর অভাবে দুর্ভোর মধ্যে রয়েছেন ১০ হাজার মানুষ। যাতায়াত ও মালামাল বহনে তাদের ভরসা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকো। বালুর চর-চরমেঘা সড়কে মেঘনার শাখা নদীর ওপর তাই সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
মেঘনার শাখা নদীর ওপর তৈরি সাঁকো দিয়ে এলাকাবাসীকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এই সাঁকো অতিক্রম করে শিক্ষার্থীরা নদীর পশ্চিম পাড়ের উত্তর চররমণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও রায়পুর উপজেলার চরকাচিয়া ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল ও মোল্যার হাট এল কে এইচ উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হয়। অপরদিকে, পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা শিশু ও বয়স্করা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদরাসায় গিয়ে নামাজ ও কোরআন শিক্ষা নিচ্ছেন সাঁকো অতিক্রম করে।
এদিকে, সাঁকো অতিক্রমের সময় পা পিছলে নদীতে পড়ে এই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেকসহ কয়েকজন গ্রামবাসী বিভিন্ন সময়ে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাঁকো পারাপার করতে না পারায় অনেক বয়োবৃদ্ধ মানুষ মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়তে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বালুর চর গ্রামের বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগে গ্রামবাসী এই নদী নৌকায় করে পারাপার করতেন। দুই যুগ আগে স্থানীয়রা চাঁদা দিয়ে সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত শুরু করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আহাম্মদ আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক জানান, প্রতিবছরই এই সাঁকো সংস্কার করতে গিয়ে স্থানীয়দের ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। গ্রামবাসী নিজেরা চাঁদা দিয়ে এই টাকার যোগান দিচ্ছেন। এই সাঁকোটির স্থলে একটি সেতু নির্মাণ হলে নদীর দুই পাড়ে বসবাসকারী প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা নিরাপদে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন করতে পারবেন। বর্তমানে এই নদীর পূর্ব পাড়ের বাসিন্দারা রিকশা ও সিএনজি অটো রিকশায় করে যাতায়াতের সুযোগ পেলেও পশ্চিম পাড়ে কোনো প্রকারের যানবাহন চলাচল করে না। ফলে পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দারা ৫/৬ কিলোমিটার পায়ে হেটে যাতায়াত করছেন।
তারা আরো জানান, এলাকাবাসীর একটাই দাবি যেন মেঘনার এই শাখা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে এলে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের পর সেতু নির্মাণ করার আশ্বাস দিলেও তারা সেই ওয়াদা আর রাখেননি।
চর রমণীমোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউছুফ ছৈয়াল বলেন, মেঘনার এই শাখা নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর স্থলে একটি সেতু নির্মাণ করার কোনো বিকল্প নেই। এই একটি সেঁতুর জন্য দুই পাড়ের প্রায় ১০ হাজার গ্রামবাসী আধুনিক যোগাযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছেন। দুই বছর আগে উপজেলা থেকে ইঞ্জিনিয়াররা এসে সমীক্ষা চালিয়ে এই স্থান সেতু নির্মাণ করার উপযোগী বলে মতামত দিলেও পরবর্তীতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা এই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি।