সারা বাংলা

কৃষ্টিয়ায় ভালো দাম পাওয়ায় অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলে বিক্রি 

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় ভালো দাম পাওয়ায় পরিপক্ক হওয়ার প্রায় দেড় মাস আগেই ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন কৃষকেরা। আর চুরি হওয়ার ভয়ে ২০-২৫ দিন আগেই রসুন তুলছেন তারা। এতে ফলন কম হবে বলে মনে করছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা। 

পবিত্র রমজান মাসে বাজারে ভালো দাম থাকায় অধিক লাভের আশায় কৃষকেরা অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। 

উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর মাঠে দেখা যায়, রসুন তুলতে ব্যস্ত কৃষকেরা। অগ্রিম রসুন তোলার বিষয়ে জানালেন, চুরি হওয়ার ভয়ে ২০-২৫ দিন আগে তারা রসুন তুলে নিচ্ছেন। 

চৌরঙ্গী বাজারে পেঁয়াজের হাটে সকাল ৮টার দিকে দেখা যায়, টন টন অপরিপক্ক পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। প্রায় দেড় মাস আগে ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে বিক্রির বিষয়ে কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, রমজান মাসে পেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় তারা অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করছেন। তাছাড়া কিছু দিনের মধ্যে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। তখন আর ভালো দাম পাওয়া যাবে না।

পেঁয়াজ কিনতে আসা ব্যাপারিরা জানান, এ বছর পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। তাছাড়া রমজান মাসে এমনিতেই পেঁয়াজের দাম বেশি হয়। যে কারণে কৃষকরা অপরিপক্ক মুড়িকাটা পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করছেন। ভারতের পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম কমবে, সেই আশঙ্কা করছেন তারা।

যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর মাঠে কৃষক তোফাজ্জেল মন্ডল, মহিউদ্দিন ও সমিরকে মাঠ থেকে অপরিপক্ক রসুন তুলতে দেখা যায়। আগাম রসুন তোলার বিষয়ে তারা জানান, চোরের ভয়ে অপরিপক্ক রসুন তুলে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। প্রায় প্রতি রাতেই মাঠ থেকে রসুন চুরি হচ্ছে। চোরের উৎপাতে পরিপক্ক হওয়ার ২০ থেকে ২৫ দিন আগেই রসুন তুলে নিচ্ছেন তারা। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ৩ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে রসুন বিক্রি হচ্ছে। অপরিপক্ক হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে ১২ মণের মতো রসুনের ফলন হচ্ছে। পরিপক্ক হলে প্রতি বিঘায় ১৬ থেকে ১৭ মণ রসুন পাওয়া সম্ভব ছিল বলে জানান তারা।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার রাইসুল ইসলাম জানান, কৃষকরা অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলে ফেলছেন। এতে করে পেঁয়াজের ফলন কমে হচ্ছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, পেঁয়াজ পরিপক্ক হওয়ার পর উঠানোর। 

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার আরও জানান, অপরিপক্ক পেঁয়াজও খাওয়া যায়, যে কারণে চাষি বা সাধারণ ভোক্তা কারও সমস্যা হয় না। আর মাঠ থেকে রসুন চুরির বিষয়ে তার জানা নেই বলে জানান তিনি।