অশ্লীল ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের ঘটনায় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাসের দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস বাদী হয়ে গত ১২ মার্চ লোহাগড়া থানায় মামলাটি করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্য আকাশ বিশ্বাসকে (২৭) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আকাশ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর গ্রামের নিহার বিশ্বাসের ছেলে। তিনি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে , গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নাম না জানা এক ব্যক্তি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে কল করেন। ওই ব্যক্তি বলেন, একটি অশ্লীল ভিডিও আছে তাদের কাছে। এর জন্য ১০ লাখ টাকা না দিলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়া হবে। এভাবে একাধিকবার চাঁদাবাজরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর মুঠোফোনে হুমকি দেন। তারা বলেন, দাবিকৃত টাকা না দিলে এবং এই কথা কাউকে জানালে অনিমেষ বিশ্বাসকে জখমসহ হত্যা করা হবে। ভয়ে ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস তার স্বামীর সম্মান ও জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হুমকিদাতার ব্যাংক একাউন্টে ওই দিন রাতে ৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা দেন। এর আগে, টাকা পাঠানোর জন্য গাড়ি নিয়ে লক্ষীপাশাস্থ ব্রাক ব্যাংক এটিএম বুথে যান ইউএনওর স্ত্রী। এ সময় গাড়িতে থাকা ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্য আকাশ বিশ্বাস তাকে পরামর্শ দেন, ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ওই একাউন্টে (চাঁদাবাজদের অ্যাকাউন্ট) দ্রুত টাকা পাঠানো যায়। এ কথায় আনসার সদস্য আকাশের ওপর সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় পর্যায়ক্রমে আরো ১ লাখ ৬ হাজার টাকা দেন। এরপর চাঁদাবাজরা আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করে। উপায়ান্ত না পেয়ে গত ১২ মার্চ ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস বাদী হয়ে এ ঘটনায় আকাশের কথা উল্লেখ করে চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ বিষয়ে জানাতে ইউএনও এবং বাদীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত দেহরক্ষী আকাশের ভাই সমীর বিশ্বাস বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হোক।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন রায় শুক্রবার (১৫মার্চ) বিকেলে বলেন, চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত আকাশ বিশ্বাসকে গত বুধবার লক্ষীপাশা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চাঁদাবাজ চক্রকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।