মাত্র ৫০ টাকায় রাত্রি যাপন করা যায় বুড়িগঙ্গায় ভাসমান হোটেলে৷ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মিটফোর্ড হাসপাতালের বিপরীতে এ ভাসমান হোটেলের অবস্থান৷ নিম্ন আয়ের মানুষের থাকার আশ্রয়স্থল। দেশের কোথাও এত কম টাকায় আবাসিক হোটেলে থাকা যায় না। একটি লঞ্চে ৫০ জন লোক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
বুড়িগঙ্গার তীরে বেশ কয়েকটি লঞ্চ সারিবদ্ধভাবে বাঁধা রয়েছে। সেই লঞ্চে উঠার জন্য কাঠের সিড়ির ব্যবস্থা আছে। এই লঞ্চগুলো এক সময় দেশের বিভিন্ন নৌরুটে চলাচল করত। এখন চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এখানে এনে অস্থায়ী আবাসিক হোটেল বানানো হয়েছে।
ভাসমান হোটেলের এক ম্যানেজার জানান, তারা এখানে সিঙ্গেল সিট ৫০ টাকা, কেবিন ১৫০ টাকায় ভাড়া দেন। মানুষের থাকার মতো মোটামুটি সব ব্যবস্থা আছে৷ কিছুটা ছোট হলেও অল্প টাকায় বেশ আরামে থাকতে পারছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা৷ একসঙ্গে পাঁচ জনের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে৷ ভাড়া অল্প হলেও এ সব হোটেলে যারা থাকেন, তারা কম সুযোগ-সুবিধা পান না৷ শীতের সময় লেপ, কম্বল, তোষক, বালিশ, বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা আছে।
নাম বলতে অনিচ্ছুক রিকশা চালক বলেন, ‘সারা দিন রিকশা চালাই। রাতে হোটেলে এসে ঘুমাই৷ প্রতি রাতে থাকার জন্য ৫০ টাকা দেওয়া লাগে। মেসে থাকার সামর্থ আমাদের নেই। মেসে থাকা, খাওয়া অনেক খরচ লাগে।’
তিনি জানান, আগে বেশিরভাগ রাত গাছের নিচে রিকশায় কাটাতেন। একদিন যাত্রী নিয়ে মিটফোর্ড ঘাটে এসে ভাসমান হোটেলের সন্ধান পান৷ এরপর থেকে এ হোটেলে রাত্রি যাপন করেন। তিন বছর ধরে ভাসমান হোটেলে থাকেন।
নাম বলতে অনিচ্ছুক ফল বিক্রিতা বলেন, ঢাকা শহরে সারা দিন ফল বিক্রি করে যে টাকা লাভ করেন, সেই টাকায় ঢাকার শহরে ভালো হোটেলে থাকা সম্ভব না৷ তার মতো গরিরের জন্য ভাসমান হোটেল হওয়ায় সুবিধা হয়েছে৷ ৫০ টাকায় রাত কাটাতে পারছেন।