বরিশালে পাইকারি বাজারের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে রসালো ফল তরমুজ। পাইকারি বাজার থেকে মাত্র ২ শ’ ফুটের ব্যবধানেই এই দাম দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন প্রতি চালানে বেশকিছু সংখ্যক তরমুজ অপরিপক্ক থাকায় তা বিক্রি অযোগ্য হয়ে পড়ছে। তাই বাকি তরমুজের দামও পড়ছে বেশি।
বরিশালে তরমুজের সবচেয়ে বড় মোকাম পোর্ট রোড ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে প্রায় ২ শত দোকানে সারিতে সারিতে সাজানো নানা আকৃতির তরমুজ। এসব তরমুজের অধিকাংশই আসে ভোলা ও পটুয়াখালি থেকে। তবে এসবের স্থানীয় তেমন কোনো বাজার নেই। অধিকাংশই চলে যায় ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। আর বরিশালের বাজারে যেসব পাওয়া যায় সেসবের দাম আকাশচুম্বি।
বুধবার (২০ মার্চ) বরিশাল পোর্ট রোডের পাইকারি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। এরমধ্যে ৬ থেকে ১০ কেজি ওজনের ১ শ’ পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায়। আর এর চেয়ে কম ওজনের ১ শ’ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকার নিচে। কিন্তু এই তরমুজই মাত্র ২ শ’ ফুট দূরত্বে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে।
এর অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন পোর্ট রোড কলাপট্টির পাইকারি তরমুজ ব্যবসায়ী মনোয়ারা বাণিজ্যালয়ের স্বত্তাধিকারী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, তরমুজের এখন মধ্যম সময় চলছে। প্রথম ধাপের তরমুজ শীত ও বর্ষার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। চৈত্র মাস তরমুজের মূল সময় হলেও এখনও বাজারে যেসব তরমুজ আসছে তার অধিকাংশই অপরিপক্ক। ব্যবসায়ীরা গড়ে এসব পণ্য ক্রয় করলেও বিক্রি করতে গিয়ে ক্রেতাদের কাছে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। ক্রেতারা অপরিপক্ক তরমুজ না নেওয়ায় বাকি তরমুজের দাম বেশি পড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া পাইকারি বাজার থেকে তরমুজ কেনার পর তার সাথে যোগ হচ্ছে পরিবহন খরচ। আবার একই সঙ্গে গড় হিসেবে কেনা ছোট তরমুজ বিক্রি করতে হচ্ছে কম দামে। তাই তুলনামুলক বড় আকারের তরমুজ দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তরমুজের দাম আরও কমবে। কেননা এখনও বাজারে চাহিদা অনুযায়ী তরমুজ আসেনি। ক্ষেত থেকে পুরোদমে তরমুজ উঠা শুরু করলেই এই দাম কমতে থাকবে।
বরিশালের পোর্ট রোড পাইকারি বাজারে তরমুজের সমারোহ।
অন্যদিকে নগরীর চৌমাথা বাজারের খুচরা তরমুজ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এখনও তরমুজ পরিপক্ক না হওয়ায় অধিকাংশরই রং লাল হচ্ছে না। তাই কাটার পরও ক্রেতারা তরমুজ নিতে চাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে যেসব তরমুজ ভালো তার দামও একটু বেশি পড়ছে। তাছাড়া ছোট তরমুজও বড়গুলোর দামে কিনতে হচ্ছে।
এদিকে বরিশালে বাজারে পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। চৌমাথা বাজারে ক্রেতা লুৎফর কবির জুয়েল বলেন, গত বছরও বরিশালের বাজারে তরমুজ বিক্রি হয়েছে কেজি দরে। কিন্তু প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে এবছর পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
তবে প্রতি পিস কেজি হিসেব করেই বিক্রেতারা দাম হাকাচ্ছেন বলে দাবি করেন এই ক্রেতা। তারপরও পিস হিসেবে বিক্রি করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তিনি।