শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেওয়া রেকর্ড ৫১১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩৭ রানেই পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর মুমিনুল হকের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ১৮২ রান পর্যন্ত করতে পারে। আর হার মানে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। যা রানের দিক দিয়ে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে মুমিনুল অপরাজিত থাকেন ৮৭ রানে। মাত্র ১৩ রানের জন্য মিস করেন ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ সেঞ্চুরি। ১৪৮ বল খেলে ১২টি চার ও ১ ছক্কায় এই রান করেন তিনি। এছাড়া মিরাজ ৬ চারে করেন ৩৩ রান। জাকির হাসান ১৯ ও ১২ রান করেন শরীফুল। বাকিদের কেউ দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি।
বল হাতে শ্রীলঙ্কার কাসুন রাজিথা ৫৬ রান দিয়ে ৫টি উইকেট নেন। ৩টি উইকেট নেন বিশ্ব ফার্নান্দো। বাকি দুটি উইকেট যায় লাহিরু কুমারার পকেটে। ম্যাচসেরা হন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা: ২৮০/১০ ও ৪১৮/১০ বাংলাদেশ: ১৮৮/১০ ও ১৮২/১০ ফল: শ্রীলঙ্কা ৩২৮ রানে জয়ী ম্যাচসেরা: ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১০২ ও ১০৮)।
পর পর দুই বলে শরীফুল-খালেদের বিদায়, হারের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ:
মুমিনুল হককে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন শরীফুল। অষ্টম উইকেট জুটিতে তারা দুজন ৮১ বল খেলে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন মূল্যবান ৪৭টি রান। তাতে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ১৬৪ পেরোয়। কিন্তু এরপর কাসুন রাজিথার পর পর দুই বলে আউট হন শরীফুল ও খালেদ আহমদ। তাতে ১৬৪ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে হারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। নিঃসঙ্গ শেরপার মতো একপ্রান্ত আগলে ব্যাটিং করছেন মুমিনুল। তিনি ১৪৭ বল খেলে ৮৭ রানে অপরাজিত আছেন। তার সঙ্গে আছেন অভিষিক্ত নাহিদ রানা। ৪৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৮২। পিছিয়ে ৩২৯ রানে।
বিরতি থেকে ফিরেই মুমিনুলের ফিফটি:
৪৬ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছিলেন একপ্রান্ত আগলে লড়াই করা মুমিনুল হক। বিরতি থেকে ফিরেই তুলে নেন ফিফটি। ১১৫ বল খেলে ৬টি চারে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি। তার ফিফটিতে ভর করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের ব্যবধান কমাচ্ছে বাংলাদেশ। তাকে সঙ্গে দিচ্ছেন শরীফুল ইসলাম। ৪১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪৫। পিছিয়ে ৩৬৬ রানে।
প্রথম সেশনে দুই উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ:
দিনের শুরুতেই তাইজুল বিদায় নেন ব্যক্তিগত ৬ রানে। তাতে ৫১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটে মিরাজ-মুমিনুল প্রতিরোধ গড়েন। তারা দুজন ১০৫ বল অথাৎ ১৭.৩ ওভার খেলে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৬৬ রান। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় ভাঙে মহামূল্যবান এই জুটি। কাসুন রাজিথার বলে কাভার দিয়ে খেলার চেষ্টা করতে গিয়ে মিরাজ এজ হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে।
এরপর শরীফুল ইসলামকে নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এগোতে থাকেন মুমিনুল। তারা দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান। বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৮ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৯। মুমিনুল ৪৬ ও শরীফুল ৩ রানে অপরাজিত আছেন। অষ্টম উইকেটে তারা দুজন ৩৪ বল খেলে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেছেন ১২ রান। শ্রীলঙ্কার থেকে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে আছে ৩৮২ রানে।
মিরাজের বিদায়, লড়ছেন মুমিনুল:
সপ্তম উইকেটে মিরাজ নেমে মুমিনুলের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন। তারা দুজন ১০৫ বল অথাৎ ১৭.৩ ওভার খেলে দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৬৬ রান। মিরাজ বেশ সাবলীলভাবে হাতখুলে খেলছিলেন। ৪৯ বলে ৬ চারে তুলে ফেলেছিলেন ৩৩ রান। কিন্তু এরপর ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে তার। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় কাসুন রাজিথার বলে কাভার দিয়ে খেলার চেষ্টা করতে গিয়ে এজ হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে। তাতে ভাঙে মিরাজ-মুমিনুলের ৬৬ রানের মহামূল্যবান জুটি।
মুমিনুল-মিরাজের প্রতিরোধে কমছে ব্যবধান:
৫১ রানেই ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ রয়েছে বড় ব্যবধানে হারের মুখে রয়েছে। তবে তাইজুল ফেরার পর মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি গড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের দুজনের ব্যাটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছে বাংলাদেশ। দুজন ইতোমধ্যে ৬৫ রানের জুটি গড়েছেন। তাতে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ১০০ পেরিয়েছে। মুমিনুল ৪০ ও মিরাজ ৩৩ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। ৩২ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১১৬।
দিনের শুরুতেই ফিরলেন তাইজুল:
আগের ইনিংসের লড়াকু তাইজুল এবার আর পারলেন না। চতুর্থদিনের শুরুতেই সাজঘরে ফিরলেন তিনি। ৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা তাইজুল দলীয় সংগ্রহে আর কোনো রান যোগ করতে পারেননি। ব্যক্তিগত এই রানেই কাসুন রাজিথার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তাইজুল।
হারের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ, চতুর্থ দিনের খেলা শুরু:
সিলেটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা আজ সোমবার সকালে শুরু হয়েছে। শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেওয়া রেকর্ড ৫১১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে তৃতীয়দিনের শেষ বিকেলে ৩৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। হারের মুখে দাঁড়িয়ে আজ চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমেছেন মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। তারা হারের ব্যবধান কতোখানি কমাতে পারেন দেখার বিষয়।