পেন্ডুলের মতো ম্যাচ দুলছিল। কখনো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এগিয়ে। কখনো প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ঢাকা লিগে দুই বিগ বাজেটের দলের লড়াইয়ে আলাদা উত্তেজনা ছড়াল বিকেএসপিতে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুই দল কেউ কাউকে ছাড় দিল না। তাতে জমে উঠল ম্যাচ। রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ শেষে শেষ হাসিটা হাসল মোহামেডান। প্রাইম ব্যাংককে তারা হারিয়েছে ১ উইকেটে।
বিকেএসপিতে আগে ব্যাটিং করে প্রাইম ব্যাংক ১০ উইকেটে ২৭৯ রান করে। জবাবে মোহামেডান বৃষ্টি আইনে ৪৭ ওভারে ২৭২ রানের লক্ষ্য পায়। ওই রান করতে নেমে চরম নাটকীয়তা ছড়ায়। ইনিংসের মাঝে একটা সময়ে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছিল মনে হয়েছিল মোহামেডান ম্যাচটা হেরে যাবে। কিন্তু আবু হায়দার রনির ৩৬ বলে ৫৪ রানের ঝড়ে ম্যাচের নাটাই চলে আসে মোহামেডানের হাতে। সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ৩৩ বলে ৪২ রানও যথেষ্ট অবদান রাখে।
এই দুজনের সাজঘরে ফেরার পর প্রাইম ব্যাংক চড়ে বসে মোহামেডানের লেজের ব্যাটসম্যানদের ওপর। ১ উইকেট হাতে রেখে শেষ ১২ বলে ২৪ রান দরকার ছিল মোহামেডানের। কামরুল ইসলাম রাব্বী ওই সমীকরণ মিলিয়ে দেন। ৪৬তম ওভারে শেখ মেহেদীকে ২ ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ ওভারে জয়ের সমীকরণ ৯ রানে নিয়ে যান। হাসান মাহমুদের করা শেষ ওভারের প্রথম বল ফাইন লেগ দিয়ে চার হাঁকান রাব্বী। পরের তিন বলে কোনো রান নিতে না পারায় আবার চাপে পড়ে মোহামেডান। শেষ ২ বলে দরকার ৫ রান। পঞ্চম বল ছিল ফুলটস। কাভারের ওপর দিয়ে এবার রাব্বী চার আদায় করে নেন। স্কোর সমান হয়ে যায় দুই দলের।
ওভারের শেষ বলে বাউন্সার দিয়েছিলেন হাসান। কিন্তু রাব্বী দারুণ টাইমিং মিলিয়ে আরেকটি চার আদায় করে নেন। জয় নিশ্চিতের পর ব্যাট-হেলমেট ছুঁড়ে ড্রেসিংরুমে ভো দৌড় দেন রাব্বী। ১৪ বলে ২৮ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। এর আগে মোহামেডানকে লড়াইয়ে রাখেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ৯২ বলে ১ চার ও ৯ ছক্কায় ৭৮ রান করেন তিনি। আরিফুল ইসলাম ৭০ বলে করেন ৪৫ রান।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে প্রাইম ব্যাংকের শুরুটা ছিল দারুণ। উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমন ১২২ রানের জুটি গড়েন। তামিম সেঞ্চুরি মিস করলেন পারভেজ তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন। তামিম ৮৩ বলে ৬৫ রান করেন ৬ চার ও ১ ছক্কায়। পারভেজ ১১১ বলে ৬টি করে চার ও ছক্কায় ১১০ রান করেন। তিনে নেমে সাব্বির রহমান করেন ৩৯ রান। প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসের শুরুটা ভালো হলেও শেষটা ভালো হয়নি। শেষ দিকে অলোকের ১৭ ও আশিকুর জামানের ১৯ বাদে কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেনি।
মোহামেডানের হয়ে বল হাতে আরিফুল হক ২০ রানে ৩ উইকেট নেন। ২ উইকেট পেয়েছেন নাসুম আহমেদ। ব্যাট হাতে ঝড় তোলার আগে বল হাতে ১ উইকেট পেয়েছেন রনি। তার হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ছয় ম্যাচে মোহামেডানের এটি পঞ্চম জয়। প্রাইম ব্যাংক ছয় ম্যাচে এটি দ্বিতীয় হার।