ব্যর্থতার স্তুপ এতোটাই বিশাল যে সামান্য উন্নতিগুলোও চোখে পড়ছে না। আগের পাঁচ দলীয় ইনিংসে দুই’শও করতে না পারা দলটি এবার তিন’শ পেরিয়ে গেল। উন্নতি কিছুটা হলেও তো হয়েছে। কিন্তু দলীয় ব্যর্থতার সামগ্রিক চিত্রটা হতশ্রী বলে বাকি কিছুই আমলে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
সিলেটের পর চট্টগ্রাম টেস্টেও প্রচণ্ড বাজেভাবে হার বাংলাদেশের। ব্যাটিং ব্যর্থতা এবারও ডুবিয়েছে গোটা দলকে। নুন্যতম কোনো লড়াই নেই। নেই ভালো করার মানসিকতা। তাড়াহুড়ো করে বাজে শটে প্রায় প্রত্যেকেই আত্মাহুতি দেন নিজেদের উইকেট। দুই টেস্টে চার ইনিংসে একই চিত্র বারবার ধরা পড়েছে। ব্যাটসম্যানদের এই ব্যর্থতা মাথা পেতে নিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে স্কোরবোর্ডের চিত্রটা যেমন, নিজেরা এতোটাও খারাপ ব্যাটসম্যান নন এমন দাবি করলেন অধিনায়ক। বুধবার ম্যাচ হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন নাজমুল। নিজেদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নাজমুল বলেছেন, ‘ব্যাটিংয়ে পুরো সিরিজে আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। এখানে অজুহাত দেওয়ার কোনো অপশন নেই যে এই কারণে হয়েছে বা ওই কারণে হয়েছে। দল হিসেবে চারটি ইনিংসে আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। যেরকমভাবে ব্যাটিং করেছি, আমরা এত খারাপ ব্যাটসম্যান না। আমাদের সামর্থ্য এর থেকে আরও ভালো। তবে যোগ করতে চাই, আমাদের টেকনিক্যালি ও মানসিকভাবে আরো বেশি উন্নতির জায়গা আছে।’
ব্যাটিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঘাটতি ধারাবাহিকতা। এক ম্যাচে রান পেলে পরের ম্যাচে রান পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেন না ব্যাটসম্যানরা। ধারাবাহিকতার ঘাটতির কারণে দলীয় সাফল্যে যেমন প্রভাব পড়ে ঠিক তেমননি ব্যক্তিগত অর্জনও ম্লান হয়ে যায়। গড় কমতে থাকে। নাজমুল মনে করেন, দীর্ঘ পরিসরে উন্নতির জন্য ব্যাটসম্যানদের দীর্ঘ পরিসরে কাজ করারও প্রয়োজন আছে, ‘অবশ্যই (দীর্ঘ পরিসরে কাজ করার) দরকার আছে। এখন সামনে যত খেলাই আছে আমাদের এভাবেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এভাবেই আমরা তিন ফরম্যাট একসাথে কীভাবে মানিয়ে খেলতে পারি ওইটা চিন্তা করে অনুশীলন, প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।’
তিন মাস পর হুট করে লাল বলের ক্রিকেট খেলায় পারফরম্যান্সে ঘাটতি ছিল বলে অনেকেই মনে করছেন। বাংলাদেশ শেষ টেস্ট খেলেছে গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপর বিপিএল, ঢাকা লিগ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ খেলা হয়েছে। লাল বলের ক্রিকেট কোথাও ছিল না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে দুই দিনের অনুশীলন করে মাঠে নামেন ক্রিকেটাররা। সাদা বলের ক্রিকেট থেকে লাল বলের ক্রিকেটে হুট করে নামায় সমস্যা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। শান্ত অবশ্য তা মনে করছেন না, ‘এটা একটা কারণ হতে পারে কিন্তু এই কথাটা আমি বলতে চাই না। কারণ, বর্তমান সময়ে যেরকম খেলা চলছে আমাদের এগুলো এডজাস্ট করেই খেলতে হবে। হ্যাঁ, যারা তিন ফরম্যাট খেলে না তাদের হয়তো একটু প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ থাকে।’