চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমি ফাইনালের টিকিট পাওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। কেননা অ্যাওয়ে ম্যাচে তারা তুলে নিয়েছে দুর্দান্ত এক জয়। বুধবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজিকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
স্পেন লিগের শীর্ষ দল ফ্রান্সের মাটিতে পেয়েছে রোমাঞ্চকর এক জয়। তাদের জয়ের নায়ক রাফিনিয়া। দুই গোল করে বার্সেলোনাকে প্রথম লেগে জিতিয়েছেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার। আর বদলি হিসেবে নেমে জয়সূচক গোল করেন আন্দ্রেন ক্রিস্তেনসেনের। এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে বিব্রতকর হারের মুখোমুখি পিএসজি।
চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে দ্বিতীয় লেগে তাদের অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে। নয়তো হতাশায় শেষ হবে তাদের আরেকটি মৌসুম।
ম্যাচে তখন ২-২ গোলে সমতা। শেষ মুহূর্তের খেলা চলছিল। এর মাঝেই আন্দ্রেন ক্রিস্তেনসেন গোল করে পিএসজির দর্শকদের চুপ করে দেন। সঙ্গে অনন্য এক কীর্তিও করেন তিনি। প্রথম বার্সেলোনার খেলোয়াড় হিসেবে নিজের জন্মদিনে গোল করার রেকর্ডটা তার দখলে। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে কর্ণার থেকে পাওয়া বলে শূণ্যে ভেসে হেডে গোল করেন ক্রিস্তেনসেন। ওই গোলেই বার্সেলোনার ভাগ্যে ম্যাচ লিখা হয়ে যায়।
শুরুটা তারাই করেছিল। রাফিনিয়া গোল করে অতিথিদের এগিয়ে নেন। ৩৭ মিনিটে তার ঠাণ্ডা মাথার শট খুঁজে নেয় পিএসজির জাল। ইয়ামালের ক্রস পোস্টের অনেকটা বাইরে এসে ফিরিয়ে দেন দোন্নারুম্মা। সেখানে ফাঁকায় বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। ডানপায়ে নেওয়া শট পৌঁছে যায় গন্তব্যে।
১-০ গোলে লিড নিয়ে বার্সেলোনা বিরতিতে গেলেও ফিরে এসে মাত্র ২ মিনিটে জোড়া গোল হজম করতে হয় তাদের। ৪৮ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান দেম্বেলে। এমবাপ্পের কোনাকুনি শট বার্সেলোনার রক্ষণের খেলোয়াড় ফিরিয়ে দিলেও দেম্বেলেকে এড়াতে পারেনি। ডি বক্সের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকা দেম্বেলে বল পেয়ে ড্রিবলিংয়ে একজনকে এড়িয়ে যান। পরে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে বামপায়ে শট নিয়ে গোল করেন।
দুই মিনিট পর পিএসজির দলগত আক্রমণে নিখুঁত গোল করেন ভিতিনিয়া। ফাবিয়ানের বাড়ানো বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে আলতো টোকায় টের স্টেগেনকে অবাক করে দেন ভিতিনিয়া। সমতা ফেরানোর পর মুহূর্তে এগিয়ে যাওয়ায় পিএসজি আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয়। একাধিক সুযোগও তারা তৈরি করেছিল। কাজে আসেনি। ৭০ মিনিটের পর তাদের নেওয়া একটি শট ফিরে আসে বারপোস্টে লেগে।
বার্সেলোনাও পাল্টা আক্রমণ করে। তারাও ছাড় দিচ্ছিলেন না। ৬২ মিনিটে রাফিনিয়া আবার তাদেরকে লড়াইয়ে ফেরান। পেড্রির বাড়ানো বল পিএসজির রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে জালে পাঠান। এরপর ৭৭ মিনিটে বার্সেলোনার জয়ের মাহেন্দ্রক্ষণ চলে আসে। কর্নার থেকে পাওয়া বলে হেডে দারুণ গোল করেন ক্রিস্তেনসেন।
৩-২ গোলে জয় নিয়ে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। পরের লেগ তাদের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে।
এদিকে ২০১৫ সালের পর এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বে প্রতিপক্ষের মাঠে ৩ গোল করলো বার্সেলোনা। সেবার পিএসজির বিপক্ষে ৩-১ গোলে তারা জিতেছিল।