বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের হাওরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আলপনা আঁকা হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে ডাক, টেলি যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক আনুষ্ঠানিকভাবে এই আলপনার উদ্বোধন করেন। পরে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে জনসাধারণের জন্য এই আলপনা উন্মুক্ত করা হয়।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, হাওর এমনিতেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এবার ১৪ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে যে আলপনা অঙ্কন করা হয়েছে, তাতে হাওরের সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এ আয়োজন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডে নাম উঠাতে যাচ্ছে। এতে দেশের পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদেরও আগমন ঘটবে। এটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অংশ।
জানা যায়, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থেকে অষ্টগ্রাম পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কে বাঙালি ঐতিহ্যের এ আলপনা আঁকা হয়েছে। গত শুক্রবার নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর আলপনা আঁকার কাজ উদ্বোধন করেন। দেশের ৬৫০ জন চারুকলা শিক্ষার্থী এ আলপনা আঁকার কাজ করেছেন।
‘উৎসবের রঙে হোক বাংলামি’ এই স্লোগানে ‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’ নামে এটির যৌথ আয়োজন করেছে এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং লিমিটেড, বাংলালিংক কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড।
বাংলালিংক চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, এই আলপনার হাত ধরে হাওরে পর্যটন খাত আরও বিকশিত হবে। এই আলপনাটি হতে যাচ্ছে বর্ষবরণ উৎসবে বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন রঙে রাঙানো পুরো সড়ক। শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ আলপনা দেখতে ভিড় করছেন। তাদের মধ্যে প্রাণখোলা বৈশাখের উৎসব। দুপুরের রোদেও অনেকেই সেখানে সেলফি তুলতে দেখা গেছে।
কটিয়াদী থেকে কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম বন্ধুদের নিয়ে আলপনা দেখতে এসেছেন। দীর্ঘ আলপনা দেখে উচ্ছ্বসিত তারা। আরিফ বলেন, হাওর এমনিতেই সুন্দর। হাওরের সবুজের মাঝে বর্ণিল আলপনায় মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই আলপনা হাওরের রূপ যেন আরও ফুটে উঠেছে। এটি স্বচক্ষে না দেখলে বর্ণনা করা কঠিন।
কিশোরগঞ্জ সদরের তসলিমা আক্তার স্বামী সন্তান নিয়ে আলপনা দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, আলপনা বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ। হাওরে এটি আরও সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এটি দেখতে পেরে খুব ভালো লাগছে।