পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি মানিক হোসেনকে (৩৩) পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পুঁইবিল গ্রামে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের সময় মানিকের মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মানিক উপজেলার কৈডাঙ্গা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। তিনি ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরি করে বাজারজাত করে আসছেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিক হোসেনসহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করেন। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাবসহ দশ বারোজন ভাড়া করা সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুঁইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরি করা ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন ধরে হুমকি দিচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, এক্সরেতে দেখা গেছে মানিকের পায়ের হাড় ডিসপ্লেস হয়ে গেছে। এর চিকিৎসা ভাঙ্গুড়ায় সম্ভব নয়। তাই পাবনা পাঠানো হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ বিষয়ে মামলা রুজু হলে আসামিদের আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নকল দুধ তৈরির বিষয়টি বর্তমানে খুবই আলোচিত। এ বিষয়েও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।