লালমনিরহাটের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ও তীব্র দাবদাহ। ফলে গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। যার প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের উপর। এতে করে বাড়ছে জ্বর, সর্দিসহ ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর চাপ বেশি। যার ফলে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায়ও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। একই চিত্র হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। বহির্বিভাগেও শিশু ও মেডিসিন চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ সিরিয়াল দেখা গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া। দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে এ রোগ হয়। এ ছাড়া গরমের কারণে ডায়রিয়ার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে ৪০ জন এবং জরুরি বিভাগে ৩০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যা বুধবার (২৪ এপ্রিল) আরও বেড়েছে। হাসপাতালের ১০ বেড বিশিষ্ট শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ২৩ জন শিশু রোগী। যাদের অধিকাংশই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
জেলার সাপ্টিবাড়ি থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৯ মাস বয়সী শিশু মুন্নির চিকিৎসা নিতে আসা মা ফিরোজা খাতুন বলেন, গত কয়েক দিন থেকে সর্দি, কাশি ও জ্বরে ভুগছে। এলাকার ফার্মেসি থেকে ওষুধ খাওয়ানো হলেও কোনো লাভ হয়নি। তাই হাসপাতালে এসেছি।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা শিশু লাবিব হাসানের মা লিপি বেগম বলেন, দুই দিন আগে হঠাৎ করে শিশুর পাতলা পায়খানা হয়। এরপর পায়খানার দ্বার দিয়ে শুধু পানি নামতে থাকে। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। বর্তমানে বাচ্চা সুস্থ আছে।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তীব্র গরমে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে রোগীর চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে তীব্র গরমে অধিক পানি পান ও রোদে বের হলে ছাতার ব্যবস্থা রাখাসহ প্রয়োজন না থাকলে বাহিরে না বের হওয়াই উত্তম।