খেলাধুলা

কেমন হবে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াড?

কেন উইলিয়ামসনকে বেশ ভাগ্যবান বলতেই হবে। আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডকে তিনিই যে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের দামামা বাজতে শুরু করেছে। বিশ দলের বিশ্বকাপে কিউইরা প্রথম দল হিসেবে জানিয়েছে কারা তাদের স্বপ্নসারথি। উইলিয়ামসন ষষ্ঠবারের মতো টি-টোয়েন্টির মেগা আসরে অংশ নিতে যাচ্ছে। অধিনায়ক হিসেবে তার চতুর্থ বিশ্বকাপ।

এখানে অবশ্য উইলিয়ামসনের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ। তবে অটোচয়েজ হিসেবেই থাকবেন সেরা ১৫ জনের দলে। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যে ট্রেনে উঠেছিলেন সাকিব, আট আসর পেরিয়ে নবম আসরেও চলছে তার বগি। সবকটি আসরে খেলা একমাত্র বাংলাদেশি ক্রিকেটার হতে যাচ্ছেন তিনি। 

সাকিবের মতো আরও একজন এই তালিকায় নাম উঠাতে যাচ্ছেন। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। বিশ্বকাপের সবকটি আসরে খেলা অনন্য রেকর্ডবুকে থাকবেন রোহিত, সাকিব দুজনই। বাংলাদেশকে দল ঘোষণা করতে হবে দুদিনের ভেতরেই। আইসিসির বেধে দেওয়া সূচি অনুযায়ী, পহেলা মে’র মধ্যে বিশ্বকাপের ১৫ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করতে হবে। এরপর ২৫ মে’র মধ্যে স্কোয়াডে পরিবর্তন করা যাবে কোন কারণ ছাড়াই।

কারা থাকবেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে সেই নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়ে গেছে অনেক আগে থেকেই। সামনে জিম্ববাবুয়ে সিরিজ থাকলেও মাঠে নামার আগেই বিশ্বকাপের দল দিতে হবে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেলকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম তিন টি-টোয়েন্টির জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন তারা। যে দলে নেই সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিব ও মোস্তাফিজ থাকবেন তা পুরোপুরি নিশ্চিত। তাহলে ঘোষিত দল থেকেই দুজনকে বাদ পড়তে হচ্ছে। এছাড়া প্রাথমিক ক্যাম্পে থাকা সৌম্য সরকার ও হাসান মাহমুদ বিবেচনায় আছেন। এর বাইরে নতুন কারো আসার তেমন সুযোগ নেই বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না উঠায় সৌম্য সরকারকে প্রথম তিন টি-টোয়েন্টিতে রাখা হয়নি। তবে বিশ্বকাপ বিবেচনায় তিনি পুরোদমেই আছেন। সেক্ষেত্রে স্কোয়াডে থাকা তিন ওপেনারের একজনকে বাদ পড়তে হবে। লিটন কুমার দাশের সঙ্গে তানজিদ হাসান তামিমকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টিকে ডাকা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা লিগে ভালো করায় ফেরানো হয়েছে পারভেজ হোসেন ইমনকে। সৌম্যকে বিশ্বকাপ দলে রাখতে হলে তানজিদ বা ইমন এ দুজনের একজনেক বাদ পড়তে হবে। এছাড়া আফিফ হোসেনকে প্রথম তিন টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে। সাকিব ফিরলে তার বিশ্বকাপ দলে থাকার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষের স্কোয়াডে সাইফ উদ্দিনকে নিয়ে রয়েছে চার পেসার। তাসকিন, শরিফুল, তানজিম। মোস্তাফিজ দলে ঢুকলে পেসার বাড়বে আরও একজন। সেক্ষেত্রে স্কোয়াডে থাকা একজন পেসার কমিয়ে মোস্তাফিজকে নেওয়া হবে নাকি কোনো স্পিনারকে বাদ দিয়ে পেসার বাড়ানো হবে তা দেখার বিষয়।

শেখ মাহেদীর সঙ্গে স্কোয়াডে আছেন রিশাদ হোসেন ও তানভীর ইসলাম। মাহেদী ও রিশাদ টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছেন। সাকিব ফিরলে বাঁহাতি স্পিনারের অভাব পূরণ হয়। সেক্ষেত্রে তানবীরের বিশ্বকাপের একাদশে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

শোনা যাচ্ছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম তিন টি-টোয়েন্টির জন্য যে ১৫ জনের স্কোয়াড দিয়েছে বিসিবি সেখানে কেবল তিন পরিবর্তন এনে বিশ্বকাপের দল দেবে বিসিবি। সাকিব, মোস্তাফিজ ও সৌম্য থাকবেন। বাদ পড়বেন তানভীর, আফিফ ও ইমন বা তানজিদ। এর বাইরে খুব একটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে। সেই সিরিজে একাধিক খেলোয়াড় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে পারে। কারণ, ২৫ মে’র মধ্যে ঘোষিত স্কোয়াডে কোনো কারণ ছাড়াই পরিবর্তন আনা যাবে। তাই শুরুর স্কোয়াড থেকে বাদ পড়লেও পরে যুক্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকবে।

বিশ্বকাপের ৫৫টি ম্যাচ দুই দেশের নয়টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি এবং ক্যারিবিয়ানের ছয়টি। ডালাসের মেট্রো এরিয়ার গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে পহেলা জুন বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। ২৯ জুন ফাইনাল ম্যাচ হবে বার্বাডোজে। দুটি সেমিফাইনাল হবে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ও গায়ানাতে।