খেলাধুলা

বিজয়ের সেঞ্চুরিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

শের-ই-বাংলার আকাশে তখন ঘন কালো মেঘ। খেলা কি তবে বৃষ্টি আইনে যাবে? না তা হয়নি। বৃষ্টি যখন আসি আসি করছে, ঠিক তখনই আনামুল হককে ডিপ মিড উইকেটে উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেললেন এনামুল হক বিজয়। এক প্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে আবাহনী লিমিটেডকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন করে মাঠ ছাড়লেন এই ডানহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

২ ম্যাচ আগেই শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে আবাহনীর। বাকি ছিল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিডিসিএল) অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সেই আনুষ্ঠানিকতা সারলো আবাহনী।

জয় নিশ্চিতের পরও বিজয়দের বিজয়োল্লাস ছিল না বললেই চলে। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে মর্যাদার টুর্নামেন্টে আকাশী-নীল জার্সিদের এটি ২৩তম শিরোপা। ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির একদল ভক্ত সকাল থেকেই মুখরিত রাখে শের-ই-বাংলা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমাগমও বাড়ে। বৃষ্টির ভয় উপেক্ষা করে দর্শকরাই উল্লাসে মেতেছিলেন।

সোমবার (৬ মে) হোম অব ক্রিকেটে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৩৪ রান করে শাইনপুকুর। তাড়া করতে নেমে ৪৬.১ ওভারে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে আবাহনী। বিজয় ১১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার ১২০ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায়। সেঞ্চুরির দেখা পান ১১৪ বলে। তার সঙ্গে জারিফ রহমান অপরাজিত ছিলেন ১১ রানে।  

শুরুতে পরপর দুই বলে আবাহনী দুই ওপেনারকে হারায়। সপ্তম ওভারের শেষ বলে ৭ রানে থাকা নাঈম শেখকে ফেরান মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ ইলিয়াসের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাব্বির হোসেন (১৪)। 

দুই ওপেনার ফিরলে তিনে নামা এনামুল হক বিজয় প্রতিরোধ গড়েন মাজহারুল ইসলাম সাগরকে নিয়ে। ২৩ রানে সাগরের আউটে ভাঙে ৬৫ রানের জুটি। এক প্রান্তে আগলে বিজয়ের সঙ্গী হন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। দুজনে এগোচ্ছিলেন ভালোভাবে। ২৯ রানে মোসাদ্দেকের বিদায়ে ভাঙে ফিফটির জুটি। 

বিজয়ের সঙ্গী এবার নাহিদুল ইসলাম। ২১ রানে নাহিদুলের আউটে এই জুটিও লম্বা হয়নি। এরপর ক্রিজে এসে ফেরেন রাকিবুল হাসান (১)। শেষে জারিফ রহমান দারুণ সঙ্গ দেন বিজয়কে। আবাহনীকে আর উইকেট হারাতে হয়নি। জারিফকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে আসেন সেঞ্চুরিয়ান বিজয়। 

এর আগে অমিত হাসান-খালিদ হাসানের ফিফটিতে ভর করে ২৩৫ রানের লক্ষ্য দিতে পারে শাইনপুকুর। অধিনায়ক অমিত সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন। ১১৬ বলে ৫টি চারের মারে ইনিংসটি সাজিয়েছেন অমিত। ৫৮ বলে ৫৮ রান করেন খালিদ। তার ইনিংসে চারের মার ছিল ৮টি আর ছয়ের মার ১টি। 

এ ছাড়া ইরফান শুক্কুর ৩৩ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। ৪৯ বলে তিনি এই রান করেন। আর কোনো ব্যাটার বিশের বেশি রান করতে পারেননি। শেষ দিকে ১৪ রান করেন আনামুল হক। 

আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রাকিবুল হাসান। ২টি করে উইকেট নেন আব্দুল রওশান-মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১টি করে উইকেট জমা হয় নাহিদুল ইসলামের ঝুলিতে।