প্রসূতি মায়ের বুকে দুধ আসতে একটু সময় লাগে। ক্ষুধায় নবজাতক কান্নাকাটি শুরু করে দিলে অভিভাবকেরা অস্থির হয়ে পড়েন তাকে কিছু খাওয়ানোর জন্য। কেউ ফর্মূলা দুধ পান করাতে শুরু করেন। সন্তানের কান্নাকাটি থেমে গেলে বুকে দুধ না এলেও মা অনেকটা নির্ভার হয়ে যান। এর ফলে অনেক সময় মায়ের বুকে আর দুধ আসে না। এমন একজন মা সাথী (ছদ্মনাম)। দুই সন্তানের মা তিনি। সাথী বলেন, আমার কোনো ছেলে মেয়েকেই বুকের দুধ পান করাতে পারিনি। বুকে এক ফোঁটা দুধও আসেনি। প্রথম খাবার হিসেবে ওদেরকে ফর্মুলা দুধ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে এই গল্প শুধুমাত্র সাথীর নয় অনেক মাকেই এমন কথা বলতে শোনা যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, মায়ের বুকে দুধ না আসার কোনো কারণ নেই। কিন্তু অনেক সময় সন্তান জন্মের আগেই মা জানতে চান, তাকে কোন দুধ খাওয়াবেন। এরকম মানসিক প্রস্তুতি থাকলে দুধ উৎপাদনকারী হরমোন পুরোপুরি সক্রিয় নাও হতে পারে।
ডা. ওমর ইবনে হাসানের পরামর্শ, নবজাতকের প্রথম খাবার হওয়া উচিত ব্রেস্ট মিল্ক বা বুকের দুধ। এ ছাড়া তাকে কোনো খাবার দেওয়া যাবে না। অনেকেই চিনি বা মধু দেন এটা কোনোভাবেই করা যাবে না। সন্তানকে দুধ পান করানোর জন্য মায়ের প্রবল ইচ্ছা থাকতে হবে। মাকে বার বার পানি পান করতে হবে। বুকে দুধ না আসার একটা বড় কারণ মায়ের ইচ্ছার অভাব। মনোযোগ দিতে হবে সন্তানের দিকে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, মা যদি টিভি দেখতে থাকেন আর নবজাতককে দুধ পান করাতে থাকেন তাহলে বুকে দুধ নাও আসতে পারে।
নবজাতকের প্রথম গোসল কখন করানো উচিত এই নিয়েও আমাদের অনেক প্রশ্ন থাকে। চলুন চিকিৎসকের পরামর্শ জানা যাক।
ডা. মো আল আমিন মৃধার পরামর্শ, নবজাতকের জন্ম যদি সিজারের মাধ্যমে হয় তাহলে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরার পরে প্রথম গোসল দেওয়াতে হবে। নবজাতক যদি প্রি ম্যাচিউর অর্থাৎ সঠিক সময়ের আগে জন্মায় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে গোসল করাতে হবে। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে যদি নবজাতকের জন্ম হলে এবং ওজন স্বাভাবিক থাকে তাহলে জন্মের দুইদিন বা ৪৮ ঘণ্টা পরেই শিশুকে গোসল করানো যায়।
উল্লেখ্য, নবজাতকের যত্নের সঙ্গে-সঙ্গে প্রসূতি মায়েরও যত্ন প্রয়োজন। দুইজনের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।