চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেলেও সুনামগঞ্জ জেলার মানুষ অনেকটাই স্বস্তিতে ছিল। এ অঞ্চলে আবহাওয়া অতটা উত্তপ্ত না হলেও গত দুই দিন থেকে জেলায় ভ্যাপসা গরম বয়ে যাচ্ছে।
আজ বুধবার (১৫ মে) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সুনামগঞ্জে এ বছরের সর্বোচ্চ। আগের দিন মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলমান এ তাপমাত্রা আরও দুই থেকে তিন দিন অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, অসহ্য গরমে সুনামগঞ্জের কৃষি মাঠে, রিকশা চালক ও রাস্তায় বের হওয়া মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। রাস্তায় বের হলে যেন চোখে-মুখে আগুনের তাপ লাগছে। গরমের কারণে রাস্তায় যানবাহন এবং সাধারণ মানুষের সংখ্যা কম দেখা গেছে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর নদী ঘাটের বালু শ্রমিক রিপন মিয়া বলেন, ‘গরমে কষ্ট হলেও সংসারের কথা চিন্তা করে প্রতিদিন কাজে আসতে হয়। কাজে না আসলে সংসারের সবার না খেয়ে থাকতে হবে। আমার একটা মেয়ে সুনামগঞ্জে মেসে থেকে লেখাপড়া করে, প্রতি মাসে তার খরচ পাঠানো লাগে। আমি ছাড়া সংসারে আর কেউ রোজগার নেই। তাই গরমে এত কষ্টের কাজ করি।’
পৌরশহরের কাজীর পয়েন্ট এলাকায় গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ৫২ বছর বয়সী রিকশা চালক হাবিবুর রহমান। তিনি রাইজিংবিডি-কে বলেন, ‘এত দিন খুব একটা গরম ছিল না। আজ অতিরিক্ত গরম পড়েছে। তাপ সরাসরি গায়ে লেগে শার্টটা ঘামে ভিজে গেছে। গরমের কারণে এক টানা রিকশা চালাতে পারি না। গরমে একেবারে ক্লান্ত হয়ে যাই। তাই এখন গাছের ছায়ায় এসে কলিজাটাকে শান্তি দিচ্ছি।’
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সুনামগঞ্জের চলমান পরিস্থিতি আগামী দুই-তিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) সিলেট অফিস থেকে সিলেটের তাপমাত্রা রেকর্ড করেছি ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সিলেট বিভাগের দু’-এক জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’