‘মুড সুইং’ কথাটির সঙ্গে আমরা অনেক বেশি পরিচিত। মেজাজের দ্রুত ওঠা-নামা হলে আমরা এই কথাটি বলি। কিশোর-কিশোরীদের এই সমস্যা বেশি হয়। মাদক সেবনকারীদেরও মুড সুইং প্রবণতা বেশি থাকে। এছাড়া যদি অন্য কোনো মানসিক ডিসঅর্ডার থাকে তাহলেও মুড সুইং হয়। মুড সুইংয়ের তীব্রতা দেখা দিলে একজন সাইকো থেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সেজন্য মুড সুইংয়ের তীব্রতা বোঝা জরুরি।
কাউন্সিলর ও সাইকো থেরাপিস্ট ফরিদা আকতার বলেন, মুড সুইং থেকে ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছেন কিনা, সেটি দেখতে হবে। যেমন খুব বেশি খাওয়া অথবা খুব কম খাওয়া, বেশি ঘুমানো অথবা একদমই ঘুম না আসা, বন্ধু-বান্ধবদের এড়িয়ে চলা-এগুলো মুড সুইংয়ের তৗব্রতা প্রকাশ করে। আরেকটি বিষয় খেয়াল করতে হবে মুড সুইং কি কোনো নির্দিষ্ট স্থানে হচ্ছে নাকি সর্বত্র হচ্ছে? বাসাতে, অফিসে, বাইরে যদি সব জায়গায় একই অবস্থা হয় তাহলেও বুঝতে হবে মুড সুইংয়ের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। যদি দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মেজাজ দ্রুত ওঠা-নামা করে তাহলে সাইকো থেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
মুড সুইং প্রবণতা কমাতে নিজেকে যেভাবে সহায়তা করা যায়
মেডিটেশন বা ধ্যান: এটা জরুরি একটা এক্সারসাইজ। যা আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, মনোযোগ বৃদ্ধি এবং পজিটিভ কাজে মটিভেশন বাড়ায়। তা ছাড়া মনও ভালো করে দেয়।
ইয়োগা বা যোগ ব্যায়াম: মুড সুইংকে কন্ট্রোল করার জন্য ইয়োগা ভালো।
ঘুম: একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। একদিন এক সময় ঘুমাতে গেলে মুড সুইং বাড়ে।
এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম: শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ জরুরি। শরীর ভালো থাকলে মনও ভালো থাকে।
ডায়েরি লেখা: মেজাজ কখন ওঠা-নামা হচ্ছে, কী কারণে হচ্ছে? এগুলো ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। তবে ডায়েরিতে লেখা নেগেটিভ কথাগুলো দ্বিতীয়বার পড়বেন না।
মিউজিক থেরাপি: স্লো মিউজিক বা শুধুই মিউজিক শুনতে পারেন। মিউজিকের সঙ্গে হালকা নাচতে পারেন। এতে ফিজিক্যালি ভালো ফিল করবেন।
ধর্ম পালন: মন দিয়ে ধর্ম পালন করলে মন ভালো থাকবে।
উল্লেখ্য, মুড সুইং হলে ব্যক্তি নিজে নিজেকে সহযোগিতা করতে পারেন একইভাবে পরিবারের অন্য সদস্যরাও সহযোগিতা করতে পারেন। সেজন্য একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কথা বলার সময় বসে কথা বলবেন। বসে কথা বললে কথার গুরুত্ব বাড়ে। কথা বলার সময় শান্তভাবে কথা বলুন। তর্কে না জড়ানোই ভালো।