শেরপুরে একটি হাতি রাস্তায় পথ আটকে দাঁড়াচ্ছে। আবার বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতির পিঠে বসা এক যুবক। এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছে হাতিটি। আর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে শুঁড় এগিয়ে দিচ্ছে সোজা দোকানির কাছে। যতক্ষণ পর্যন্ত দোকানি শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে না দিচ্ছেন, ততক্ষণ শুঁর তুলছে না হাতি। টাকা দিলে শুঁড় তুলে জানাচ্ছে সালাম। এভাবে প্রতি দোকান থেকে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। শুধু দোকান নয়। রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন থামিয়েও টাকা তোলা হচ্ছে।
শেরপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে এ অভিনব কায়দায় টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে হাতির মাধ্যমে। এ ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে অনেকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চাইছেন।
সোমবার (২০ মে) সকালে দেখা গেছে, পৌর শহরের নয়ানী বাজারে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে। হাতি দিয়ে গাড়ি আটকেও টাকা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির এ দৌরাত্ম্য থেকে বাদ পড়ছে না মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চালকরাও। টাকা না দিলে হাতি বিকট শব্দে হুংকার দেয়। তখন দোকানদার ও গাড়ির চালকরা ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হয়।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ী নন্দন কুমার বলেন, হঠাৎ করে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। টাকা না দিলে হাতি ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে। বেচাকেনায় ঝামেলা হয়। এই এলাকার রাস্তা এমনিতেই সরু। সব সময় যানজট লেগে থাকে। তার উপর হাতির ঝামেলা। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
রহিম মাওলা নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাতিটি শুঁড় এগিয়ে দিয়ে আমার কাছে টাকা চাইল। টাকা দেইনি। তাই সামনে থেকে আর সরে না। বিকট শব্দে শুঁড় নাড়াচাড়া করার পর ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হলাম।’
হাতির পিঠে বসা যুবককে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘এখন সার্কাস আগের মতো নেই। আমাদের উপার্জন কমে গেছে। হাতি লালন-পালন করতে অনেক টাকা খরচ লাগে। হাতি রেখে অন্য পেশায় যেতেও পারি না। তাই মাঝেমধ্যে খাবার খরচ যোগাতে বের হতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রাণী দেখে অনেকে আগ্রহী হয়ে ১০-২০ টাকা দেয়। আমি জোর করে কারও কাছ থেকে টাকা নেই না। হাতিটি শিশুদের আনন্দ দেয়। কারও ক্ষতি করে না। অনেক সময় আমরা শিশুদের হাতির পিঠে চড়িয়ে আনন্দ দেই।’
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এমদাদুল হক বলেন, হাতি দিয়ে চাঁদা তোলার বিষয়টি তাকে কেউ জানাননি। এর আগে এখনও ঘটনার কথা শোনেননি। আবারও যদি আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।