স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে নারীদের আরও বেশি ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। নারীদের অংশগ্রহণে পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী হবে।
বুধবার (২২ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘পুঁজিবাজারে নারী ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী পুরস্কার- ২০২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আব্দুর রহমান খান।
ড. শিরীন শারমিন বলেন, পুঁজিবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ অধিকতর করার লক্ষ্যে আজকের যে অনুষ্ঠান এজন্য আমি বিএসইসিকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বে নারী ক্ষমতায়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে সমগ্র বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং লিঙ্গ সমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে যেন নারীরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে। পুঁজিবাজারে নারীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসকল প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, সেগুলো দূর করতে হবে।
স্পিকার অরো বলেন, পুঁজিবাজার একটা বিশেষায়িত ক্ষেত্র। পুঁজিবাজারে নারীর অংশগ্রহণের সম্ভাবনা অপার। মেয়েরা যেভাবে সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে, পুঁজিবাজারেও তারা এগিয়ে আসবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। পুঁজিবাজারে জেন্ডার গ্যাপ দূর করতে হবে। পুঁজিবাজারে নারীদের সেভাবে অংশগ্রহণ বাড়াতে পারিনি। শতকরা ২৪ ভাগ নারীদের অংশগ্রহণ পুঁজিবাজারে৷ ২০০৭ সালে যা সাড়ে ৭ লাখ ছিল তা কমে ৪ লাখের কাছাকাছি নেমে এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারীদের পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণ অনেক বেশি। তাই এই বিষয়টিকে নিয়ে এনালাইসিস করার সুযোগ আছে। আমি মনে করি যেহেতু নারীরা প্রতিটি খাতে ভূমিকা রাখছে, সেহেতু পুঁজিবাজারেও নারীরা আরও ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। এর মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টিও অনেক বেশি শক্ত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। তিনি অনলাইন ও অটোমেটেড ট্রেডিং প্লাটফর্ম চালু করেছেন। পুঁজিবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ১৯৭২ সালে দেশের অর্থনীতিকে পুনরূদ্ধার করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে আমাদের ট্রানজেকশনগুলো হতো না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আব্দুর রহমান খান বলেন, আমাদের স্টক মার্কেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম হবার কারণ হচ্ছে যেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে সেগুলো ভালো পারফর্ম করতে পারেনি। আমরা যারা সুযোগ দিয়েছি যেসব কোম্পানিকে সেগুলোকে আমরা সহনীয় হয়ে সুযোগ দিয়েছি। সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ রুলস মেনে সিদ্ধান্তগুলো নিতে হবে। এই কাজটি শুরু করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি। যেগুলো কোম্পানি অনেকগুলোর শেয়ার ১০ টাকার গুলো ৫ টাকায় নেমে আছে। যেসব ভালো কোম্পানি ভালো ব্যবসা করে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিচ্ছে তাদের শেয়ারের দাম কিন্তু কমছে না। তাই আমাদের কোম্পানি অনুমোদন দেওয়ার আগে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এর আগে ‘পুঁজিবাজারে নারী’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মডারেটর ছিলেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার। বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি সঙ্গীতা আহমেদ, অ্যাসোসিয়েশন অফ ফ্যাশন ডিজাইনার্স অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদ, ইউনিলিভার বাংলাদেশের পরিচালক শামীমা আক্তার এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডসের সহ-সভাপতি মনিজা চৌধুরী ডিশকাসনে অংশ নেন।