৬ বলে প্রয়োজন ১২। বাংলাদেশের হাতে মাত্র ১ উইকেট। পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের অনুকূলে। প্রথম বলে লেগ বাই থেকে ঝুঁকি নিয়ে রিশাদ হোসেনকে স্ট্রাইক এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় বলে চার মেরে আশার ভেলা ভাসিয়ে তোলেন রিশাদ। কিন্তু পরের বলেই সব শেষ! স্কুপ করতে গিয়ে তৃতীয় বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন রিশাদ।
‘পচা শামুকে পা কেটে’ বিশ্বকাপ শুরুর আগে বড় ধাক্কা খেলো বাংলাদেশ। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ রানে হেরে সিরিজ খোয়ালো কাগজে-কলমে, শক্তিতে-সামর্থ্যে এগিয়ে থাকা লাল সবুজের দল। সিরিজের শেষ ম্যাচটি এখন বাংলাদেশের জন্য অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই, অন্যদিকে মাত্র ৫ বছর আগে টি-টোয়েন্টি খেলা শুরু করা যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়ার রসদ।
হিউস্টনের প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান করে যুক্তরাষ্ট্র। তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ৩ বলে আগেই ১৩৮ রানে অলআউট হয়।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের শুরুটা হয় নড়বড়ে। প্রথম ওভারে নিজের প্রথম বলে শূন্য রানে ফেরেন সৌম্য সরকার। লিটন দাসের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া তানজীদ হাসান তামিম থিতু হয়েও ১৫ বলে রান করে ফেরেন।
এবার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এগোতে থাকেন তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে। এক প্রান্তে তাওহীদ রানের চাকা সচল রাখলেও শান্ত ছিলেন ধীরগতির। তবুও দুজনের জুটি দিচ্ছিল স্বস্তি। ছক্কা হাঁকিয়ে শান্ত দেন বড় ইনিংসের আভাস। কিন্তু না, রানআউট হয়ে প্রমাণ দেন তার মন নেই খেলাতে। ৩৪ বলে ৩৬ রানে শান্ত ফিরলে ভাঙে ৪৮ রানের জুটি।
শান্তর উইকেটের রেশ না কাটতেই ফেরেন তাওহীদও। ২১ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। তার আউটের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশের উইকেটের মিছিল। একে একে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩) জাকের আলী অনিক (৪) সাকিব আল হাসান (৩০) ও তানজীম হাসান সাকিব। ৯২ থেকে ১২৫; ৩৪ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়।
এক প্রান্তে আগলে রেখে খেলছিলেন অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান। দলের বিপদে তিনিও হাল ধরতে পারেননি। ২৩ বলে ৩০ রানে আউট হলে হারের শংকা ঘিরে ধরে টাইগার শিবিরে। টেল এন্ডার শরিফুল ইসলাম ৪ বল খেলে ফেরেন ১ রান করে। একমাত্র ভরসা রিশাদের (৯) আউটে কাছে গিয়ে হারে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আলী খান। ২টি করে উইকেট নেন সৌরভ-শ্যাডলি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। দুই ওপেনার পাওয়ার প্লেতে যোগ করেন ৪২ রান। পরপর দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন রিশাদ হোসেন। ৩১ রান করে ওপেনার স্টিভেন টেলর ফিরলে ভাঙে জুটি।
ক্রিজে এসেই রিশাদের প্রথম বলেই আউট হন নতুন ব্যাটার আন্দ্রেইস গোমেজ। পরপর দুই ব্যাটার ফেরার পরও যুক্তরাষ্ট্রের রানের গতি সচল ছিল। ৫৬ বলে ৬০ রানের জুটি গড়েন মোনাংক প্যাটেল-অ্যারন জোন্স। ৩৫ রানে জোন্স আউট হলে ভাঙে জুটি।
ক্রিজে এসে করি অ্যান্ডারসন সুবিধা করতে পারেননি। ১১ রান করেন। এবার অন্য প্রান্তে আগলে রেখে খেলতে থাকা প্যাটেলও ফেরেন সর্বোচ্চ ৪২ রান করে। আগের ম্যাচে ডেথ ওভারে এলোমেলো বোলিং করলেও এই ম্যাচে হাত খুলে রান দেননি মোস্তাফিজুর রহমানরা। উইকেট হাতে থাকলেও দেড়শর আগে থামে তাদের ইনিংস। শেষ দিকে সমান ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন নিতীশ কুমার-শ্যাডলি ক্লদ ভ্যান। বাংলাদেশের হয়ে সমান ২টি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন।