সারা বাংলা

বন্ধ হলো মাটি খুঁড়ে সোনার সন্ধান, পুলিশি পাহারায় সেই ইটভাটা

ঠাকুরগাঁওয়ে অবশেষে বন্ধ হয়েছে ইটভাটার মাটির স্তুপে খনন করে সোনার সন্ধান। সেই ইটভাটায় মানুষের আনাগোনা বন্ধ করতে ১৪৪ ধারা জারির পর পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলের আলোচিত আরবিবি ইটভাটায় গেলে দেখা যায়, ইটভাটার চারিদিকে দড়ি বেঁধে লাল কাপড় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বেষ্টনীর বাহিরে পুলিশ সদস্যরা ঘিরে রেখেছে ইটভাটাটি।

এরআগে শনিবার (২৫ মে) রাতে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রকিবুল হাসান এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার রাজোর গ্রামের মো. রুহুল আমিনের মালিকানাধীন আরবিবি ইটভাটায় মাটির স্তূপ খুঁড়ে স্বর্ণ পাওয়া যাচ্ছে; এমন গুজবে স্থানীয় লোকজন বেশ কয়েকদিন যাবৎ খুন্তি, কোদাল, বাশিলা দিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করে প্রতিদিন স্বর্ণের সন্ধান করছে। এতে আগ্রাসী লোকজন স্বর্ণ পাওয়ার আশায় ঝগড়া-বিবাদ করছে ও দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে। প্রতিদিন মাটি খুঁড়ে স্বর্ণের সন্ধান করতে থাকলে যে কোনো সময় ঘটনাস্থলে মারামারি, খুন, জখমসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জুডিসিয়াল মুন্সীখানা শাখা থেকে উক্ত স্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রকিবুল হাসান ইটভাটা এলাকা ও এর আশপাশে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেন।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে মাইকিং করে ইটভাটায় মাটি খনন করে স্বর্ণ খোঁজা বন্ধের জন্য বাধা দেওয়া হয় স্থানীয় জনসাধারণকে। সেইসঙ্গে পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।

ইটভাটায় স্বর্ণ খুঁজতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঠিক জানতাম না ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তাই আজও কোদাল নিয়ে স্বর্ণ খুঁজতে এসেছি। দুই দিন মাটি খুঁড়ে আমি কোনো স্বর্ণ পাইনি। তাই আশা ছিল আজকে পাবো। কিন্তু সেখানে ঢুকতে পারলাম না। পুলিশ বাধা দিচ্ছে। আমাকে একটু মাটি খোঁড়ার জন্যে সুপারিশ করে দেন।

পাশের উপজেলা থেকে আসা আল মামুন জীবন বলেন, শুনেছি এখানে মাটি খুঁড়লেই সোনা পাওয়া যাচ্ছে। তাই অনেকে এখানে এসে মাটি খুঁড়ছে। তাই দেখতে আসলাম। কিন্তু আসার পর জানতে পারলাম মাটি খনন বন্ধ হয়ে গেছে।

সেই ইটভাটার ম্যানেজার মো. লিটন মিয়া বলেন, ১৪৪ ধারা জারির পরে এখানে এখন পরিবেশ শান্ত। প্রশাসন মাটি সরিয়ে অন্যত্র নিতে বলেছে। তাই মাটি সরানোর কাজ করা হচ্ছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রকিবুল হাসান বলেন, মাসখানেক ধরে মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে মাটি খুঁড়তে থাকে। যেহেতু মানুষ সেখানে মাটি খোঁড়ার জন্য কোদাল-খুন্তি নিয়ে দলবদ্ধ হচ্ছে; সে কারণে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ইটভাটার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

আরও পড়ুন: স্বর্ণের খোঁজে ঠাকুরগাঁওয়ে মাটি খুঁড়লেন হাজারো মানুষ, ১৪৪ ধারা জারি