ভারতীয় অভিনেত্রী, উপস্থাপক এবং মডেল অপরাজিতা ঘোষের ব্লাউজ স্টাইলিং ভাবনায় নতুনত্ব রয়েছে। আমরা যারা শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ মেলাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলি তাদের চিন্তাটাকে আরেকটু সহজ করে দিতে পারে অপরাজিতার ফ্যাশন ভাবনা। রাইজিংবিডিকে অপরাজিতা ঘোষ জানান, ব্লাউজটা শরীরের টাচে থাকে। ব্লাউজ যদি কমফরটেবল না হলে শাড়ি পরেও কমফরটেবল লাগবে না। তা ছাড়া শাড়িও আর দশটা পোশাকের মতো পোশাক। যদি কোনো বিশেষ ড্রেসকোড না থাকে, তাহলে যেকোন জায়গায় শাড়ি পরা যায়। শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে রঙটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
অপরাজিতা বলেন, আমি শাড়ির সঙ্গে কনট্রাস্ট ব্লাউজ পরতে পছন্দ করি। তবে ব্লাউজ মানেই একেবারে টিপিক্যাল হবে তা নয়। যেমন— সামনে বোতাম হবে, ব্লাউজের মতোই দেখতে হতে হবে এটা আমার কাছে ম্যাটার করে না। এজন্য আমি শাড়ির সঙ্গে ক্রপ টপ, শার্ট, শীতকালে জ্যাকেট অথবা হাইনেক সোয়েটারও পরি। আমার ওয়ারড্রবে ব্লাউজ যেমন আছে তেমনি নানারকম কিছু পরি। একটা জিনিস খেয়াল রাখি যে, একটা শাড়ি কিনেছি বলেই একটা নতুন ব্লাউজ কিনতে হবে; এটা যেন না হয়। মানে অকারণে প্রচুর ব্লাউজ কেনা হয়ে গেল— এটা একেবারেই ঠিক মনে হয় না।
প্রথম ছবিটি প্রসঙ্গে অপরাজিতা বলেন, তখন আমার ওয়ারড্রব এতোটা রিচ হয়নি। মায়ের শাড়ি ব্লাউজ পরেছিলাম। সিল্কের সঙ্গে কটকির কাজ এই ব্লাউজটা খুব অফবিট আর নিজের খুব ভালো মনে হয়েছিল।
এই ছবিটি প্রসঙ্গে অপরাজিতা বলেন, কাঁথা স্টিচের এই ব্লাউজটা পরেছিলাম মাটি রঙের একটি শাড়ির সঙ্গে। শাড়িতেও কাঁথা স্টিচ রয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে ব্রাউনের সঙ্গে রেড একটা অদ্ভূত কম্বিনেশন তৈরি করে। সেই কারণেই এই ব্লাউজটা বেছে নেওয়া।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মলমলের শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরেছেন একটি সুতির ক্রপ টপ। অপরাজিতা বলেন, প্যাস্টেল একটা শেডের মধ্যে থাকতে চেয়েছিলাম। একেবারে কনস্ট্রাটে যেতে চাইনি কাছাকাছি শেডের মধ্যে যেতে চেয়েছিলাম। যদিও ক্রপ টপটা এর আগেও অন্যান্য শাড়ির সঙ্গে পরেছি। তারপরেও এই শাড়ির সঙ্গে পরেছি এবং দেখলাম যে অদ্ভূত সুন্দরভাবে মানিয়ে গেল।
ছবিটির দিকে তাকিয়ে দেখুন, একেবারে চোখের আরাম যাকে বলে-ঠিক যেন তাই। অপরাজিতা বলেন, শুটটি একটি ব্রান্ড- এর জন্যই করা হয়েছিল কিন্তু স্টাইলিংয়ের ভাবনাটা পুরোপুরি আমার। খুব ক্যাজুয়াল একটা অ্যাপ্রোচ থেকে শুটটি করা হয়েছিল। কোটা দরিয়া শাড়ির সঙ্গে সফট ম্যাটারিয়ালের গোল্ডেন রঙের ব্লাউজ। ঈদ এবং নববর্ষের আগে-আগে এই শুটটি করা হয়েছিল। যেহেতু উৎসব তাই আমি এই রঙটা বেছে নিয়েছি। উৎসবে গোল্ডেন, সিলভার এই টাচগুলো খুব ভালো লাগে। আমার কাছে মনে হলো যে বটল গ্রীন রঙের শাড়ির সঙ্গে এই ব্লাউজটা যখনই পরছি তখনই একটা উৎসবের আমেজ আসছে।
ছবির দিকে তাকিয়ে মনে হতে পারে শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের মিল নেই, আবার অমিলও নেই। অপরাজিতা বলেন, এই ব্লাউজে প্যাচওয়াকের সঙ্গে কাঁথা স্টিচ আছে, কিছুটা অ্যাপ্লিক রয়েছে—মানে মিক্সড একটা কাজ। এটাতে যদিও কালো রঙের উপস্থিতি আছে। তবে সবমিলিয়ে আমার জন্য এবং চোখের জন্য আরামদায়ক মনে হয়েছে। যে কারণে এটি বেছে নেওয়া।
অপরাজিতা পরে আছেন একটি জামদানি শাড়ি। যাকে তিনি বলছেন ঢাকাই শাড়ি। এর সঙ্গে একটা ওয়েস্টার্ন ওভারসাইজড টপস পরতে দেখা যাচ্ছে তাকে। অপরাজিতা বলেন, শাড়িটার আঁচলটা একটু ছোট করে একটা ব্রুজ লাগিয়ে শাড়িটা পরেছিলাম। ঢাকাই শাড়ি মানে ট্রেডিশনাল শাড়ি সেটা নিয়েতো বলার কিছু নেই কিন্তু টিপিক্যালি এরসঙ্গে কনট্রাস্ট একটা ব্লাউজ দিয়ে পরবো, আমার সেরকমটা মনে হয়নি। দেওয়ালি একটি অনুষ্ঠান। একটি রেঁস্তোরায় হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। এমন অনুষ্ঠানে অনেকেই ওয়েস্টার্ন পরেছিলেন বা পরে থাকেন আমি ইন্দো ওয়েস্টার্ন একটা টাচ আনার চেষ্টা করেছি। যেন পুরোটা সময় আরামে থাকতে পারি আবার স্টাইলিশও দেখা যায়। আর শাড়িটা পিন করার ক্ষেত্রে সেফটিফিনের পরিবর্তে ব্রুজটা মনে হয়েছে সুইটেবল।
স্প্যাগেটি টপের সঙ্গে মিলিয়ে পরেছেন শাড়ি। অপরাজিতা বলেন, কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নীল একটা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরেছি একটা সবুজ স্প্যাগেটি টপ। সঙ্গে একটি ব্রুজ পরেছি। এটা একটা অ্যাকসেসরিজ হিসেবে পরে নিয়েছি। ইন্টারন্যাশনাল যেকোন ফেস্টিভ্যালে চেষ্টা করি ট্রেডিশনাল ড্রেস পরার। যেহেতু আমি আমার দেশকে রিপ্রেজেন্ট করছি। কম্বিনেশনটা দেখা যাচ্ছে নীলের সঙ্গে সবুজ। যদিও আন ইউজুয়্যাল কম্বিনেশন কিন্তু আমি এটা বেছে নিয়েছি- কারণ টিপিক্যাল কম্বিনেশন চাইনি। প্রেডিকটেবল কম্বিনেশন হতে হবে- এমনটা আমার সব সময় ভালো লাগে না। আমার এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালো লাগে।